বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৩

কবিতা আবৃত্তি

কৃতকর্মে অনুতপ্ত কবি
শুরু করেছেন কবিতা আবৃত্তি,
প্রতিটি কবিতায় পূর্ণজন্ম
প্রতিটি ছন্দের পূনরাবৃত্তি।
অচেতন ছিল কবিতাগুলো
এতদিন জড় পদার্থ,
কবিতা আবৃত্তিতে কবির
নেই মনে বিভ্রান্ত।
অবিরামভাবে কবি তাই
করে যাচ্ছেন কবিতা আবৃত্তি,
লেখা কবিতাগুলো কবিতার জগতে
কবিতা বলে পেলো স্বিকৃতি।
দাঁড়ি, কমা ও সেমি-কোলনের ব্যবহারে
কবিতা আবৃত্তি শ্রুতিমধুর,
শ্রীময় উচ্চারিত কবিতার ধ্বনি
যেমনটা শ্রীযুক্ত হয় মুখমণ্ডল নব বিবাহিত বধূর।

অভিশপ্ত ভালবাসা

অভিশপ্ত ভালবাসা
তীলে তীলে দিয়ে যাচ্ছে ব্যথা,
কেমন করে সইবো এর কষ্ট
হৃদয়ে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে গাঁথা।
ভালবাসার মানুষ সরিয়েছে তার হাত
ছিঁড়েছে আত্মার বাঁধন,
অভিশপ্ত ভালবাসা দিয়েছে গাঁয়ে
মৃৃত লাশের সাদা কাফন।
মৃত ভালবাসা মনেতে অচল
রুক্ষ ভালবাসার মুখ,
নিষ্পাপ ভালবাসা আর নেই বুকে
অভিশপ্ত তার সুখ।

সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৩

জ্যামিতিক কবিতা

সাদা কাগজের উঠানে
পেন্সিল দিয়ে ময়ূর পক্ষীর মতন নূত্য,
নূত্যের তালে পরেছে ছাপ
কম্পাসে আঁকা বিত্ত।
বিত্তের গোল কাঠামোর ভেতর
বিন্দু একাকীত্ব,
ক্যামেরা দিয়ে তোলা হবে
সাদাকালো তার চিত্র।
ফোকাস করা হল একাকীত্বের উপর
দেখলাম একটা ত্রিভুজ,
যার মধ্যে নেই বিন্দু
অদৃশ্য আকারে নিখোঁজ।
উপপাদ্য ও সম্পাদ্য গড়মিল
বিয়োগফল শূন্য,
চতুর্ভূজ তাই গিয়েছে বনে
বিন্দুকে খোঁজার জন্য।
চতুর্ভূজের সমান্তরাল রেখাগুলো
হয়ে আছে বাঁকা,
বিন্দু ছাড়া বৃত্ত হল
রহস্যময় আঁকা।

অনুভূতি ২

দূর পাহাড়ের চূঁড়ায়  বসে কে যেন আমায় ডাকছে,
কে যেন আমায় দেখে হাতছানি দিচ্ছে ,
জানি না কে সে।
তবুও বড্ড পরিচিত লাগছে তাকে,
মনে হচ্ছে সে আমার অনেক কাছের
যেন সে আমার প্রিয়তমা,
অথবা অন্য কোন প্রিয় মানুষ।
যে কী না অনেক পরিচিত
বহুকাল ধরে য়ার সাথে আমার পরিচয়।
কিন্তু অন্ধকারের কালো রশ্মিতে
পরিষ্কার দেখা যাচ্ছেনা তার মুখ খানি,
আঁচ করলাম সে বোধ হয় হাসছে,
দূরত্বের ব্যবধানে শোনা যাচ্ছেনা
তার অট্টহাসির জোড়ালো আওয়াজ,
অথবা বোধহয় সে কাঁদছে,
হয়ত সে আমার উপর নারাজ।
আর না হয় সে এমনেতেই
বসে রয়েছে দূর পাহাড়ের চূঁড়ায়
হয়ত সে দেখতে এসেছে আমি কেমন আছি।
জানি না আমার কন্ঠস্বর সে শোনবে কী না
তবুও জোড়ালো গলায় বলছি চিৎকার করে
শোন, আমি ভালো আছি, বেঁচে আছি।

সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

চলছে গাড়ি যাত্রা বাড়ি


চলছে গাড়ি যাত্রা বাড়ি,
পাহাড়-পর্বত দিচ্ছে পাঁড়ি,
দুটি পাতা একটি কুড়ি,
সঙ্গে করে মাটির হাঁড়ি,
সামনে এল একটি নারী,
পরনে তার লাল শাড়ী,
কিনেছে সখী কাঁচের চুড়ি,
পকেট থেকে হয়েছে চুরি,
কে করলো দুষ্টু বুড়ি,
খাইবে নাকী চিড়া-মুড়ি,
বেশি খেলে বাড়বে ভুড়ি,
ফুলেছে ব্যথায় দাঁতের মাড়ি,
নদীর তীরে ভাসছে তরী,
বাজিয়ে গান ভিন্ন সূরি,
চলছে গাড়ি যাত্রা বাড়ি,
গন্তব্য কোথায় অচিনপুরী।

আমি ৫

মানব চিড়িয়াখানায়
এক বিচিত্র প্রাণী আমি,
যার কাছে নিজ স্বার্থ
সর্বাপেক্ষা দামি।

নিজ স্বার্থে স্বার্থপর আমি
কিছুটা প্রতারক,
বহুরুপে গঠিত আমি
কলঙ্কের বাহক।

যার মনে হিংসা
ধীরেধীরে বিকশিত,
কু-কাজে আমার ভাবনা
অবিরাম সম্প্রসারিত।

অহংকার আমার মনে
গুপ্ত এবং বিরাজমান,
অদৃশ্য অহংকারের ছাপ
লুকানো তার প্রমাণ।

নিজ ইচ্ছায় প্রকাশ্য আমার
অস্তিত্বকর আচরণের প্রচারণা,
নিজে মুখে আমার ভাল-মন্দের
পার্থক্যমূলক সমালোচনা।

একেক সময় আমি হতভাগ
অযৌক্তিক আমার কর্মকাণ্ড,
ভাবনার জগতে ভাবার সময় কোথায়
আমি গঠিত, না লন্ড-ভন্ড।

রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৩

প্রেমিক-প্রেমিকা ২

প্রেমিকার মন খারাপ
তার প্রেমিক দিয়েছে তার হৃদয়ে আঘাত,
আঘাতের কষ্টে কেঁদেছিল প্রেমিকাটি
সাড়াটি অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত।
তার উজ্জ্বল দুটি চোখ
পরিণত হয়েছিল ঝর্ণায়,
ভেসেছিল তার হৃদয়
চোখের জলে বন্যায়।
কাঁচের তৈরি তার হৃদয়
আঘাতে ভেঙ্গে দুই ভাগ,
যে হৃদয়ে প্রেমিকের জন্য প্রেম ছিল
আলাদা করে বিভাগ।

অবুঝ সেই প্রেমিক
বুঝেনি প্রেমিকার প্রেমের মর্ম,
বরং তার প্রেমিক হৃদয়ে দিয়েছে আগাত
অস্ত্র আঘাতজনিত কর্ম।
সেই আঘাতে আহত হৃদয়
প্রতিবাদ জানায়,
মুখ ফোটে প্রেমিকা বলেনা কিছু
সে শুধু কাঁদে ব্যর্থ ইশারায়।
তার চোখের ইশারা বুঝতে
অক্ষম প্রেমিক,
প্রেমিকার কষ্টে
সে পথ হারা পথিক।
সে তার কৃতকর্মে
প্রেমিকার কাছে অনুতপ্ত,
নিজের কাছে সে নিজে
তিক্ততায় লজ্জিত।
সে জানে তার প্রেমিকার হৃদয়
পুষ্পের মত কচি,
প্রেমিকার ভাঙ্গা হৃদয় জোড়া লাগাতে
চালায় সে অভিনব কর্মসূচি।
এইভাবে চলে খানিকক্ষণ
প্রেমিক-প্রেমিকায় মন কষাকষি,
তবুও তারা দুজন কাছে থাকে
হাতে ধরে দু'নয়নে পাশাপাশি।

শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩

নিষিদ্ধ নারী

শত রুপে রুপবতি নিষিদ্ধ নারী,
যার রুপে উম্মাদ যুবক দেয় জলন্ত সিন্ধু পাঁড়ি।
যে নারীর বাহুতে গরম হাওয়া বহে বারোমাস,
যার সাথে মিলনে মনুষ্যত্বে সর্বনাশ।
যে নিষিদ্ধ নারী যৌবনে আবেগময়ী,
নিষিদ্ধতা তার শরীরে প্রতিনিহিত পরিচয়ী।
যার নেশায় যুবকের পশুত্ব জেগে উঠে যৌবন বাসনায়,
যুবক তাকে চায় শয়ন কক্ষে বিবস্ত্র অবস্থায়।
লোভী যুবক, সাথে নিষিদ্ধ নারী সর্বনাশা,
যে নারীর জন্য যুবকের জাগ্রত মন্দ সুখের আশা।
যুবক তুই করিস না ভুল, চলে যা নিষিদ্ধ নারী হতে দূরে,
নিষিদ্ধ নারী মুক্ত কোন অচিনপুরে।
যেথায় নেই নিষিদ্ধ নারীর যৌবন সুখের মায়া,
অথবা যুবক কাবু কর বসনায়, ছিন্ন করে পশুত্বের ছায়া।

সময়ের দাবি

সময় চলে যাচ্ছে দ্রুতবেগে,
রাগান্বিত সময় রাগ-অভিমানেরেগে।
সময় পায়না তার কাম্য সম্মান,
মানবজাতি দেয়না সময়কে মর্যাদা
যেন মানুষেরা কৃপন ও পাষাণ।

আসবো বলে কেউ আসেনা সময় মত,
করবো বলে করেনা কেউ হাতের কাজ ফেলে রেখেছে যত।
সময় জ্ঞানে অভাবি মানষ, সময়ে করেনা সময়ের কাজ,
বেহায়া মানুষ তারা, নেই কোনো লাজ।

সময়ের এখন একটাই দাবি, সময় চায় তার কাম্য সম্মান,
মানবজাতি সময়কে দেবে মর্যাদা, পরিমানে উচ্চ পরিমান।
অলস হয়ে কেউ আর কাঁটাবেনা সময়,
দূর হবে মানব হতে অলসতার পরিচয়।
খোলবে সাফল্যের দোয়ার, পূর্ণ হবে সময়ের দাবি,
যেখানে সময় জ্ঞান সাফল্যের চাবি।

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৩

সবুজ

আমার চারপাশে সবুজের সমারোহ
সবুজ মাট, সবুজ পথ, সবুজ গাছের সবুজ পাতা
সব মিলিয়ে এক মনোহরণ পরিবেশ,
জনমানবের কোলাহল মুক্ত এই সবুজ
যেন সবুজের ভিড়ে শহরের শেষ।

ভালো লাগে আমার সবুজের এই সমারোহ
ভালো লাগে সবুজের সজীবতা,
এর মাঝে আমি ভূলে যাই
আমার ছিল যত হীনতা।

আমি স্বাধীন সবুজের এই সবুজ রঙ্গে
আমি চাই সবুজের মধ্যে আপন ভুবন সাজাতে,
স্বাধীনভাবে ডানা মেলে সবুজের উপর বেড়াতে।
কেননা এই সবুজ প্রবাহিত বায়ুতে আমি পাই সবুজের ঘ্রাণ,
যে ঘ্রাণে উতফুল্ল আমার দেহ, মন ও প্রাণ।
এই সবুজের মধ্যে আমি ফিরে পাই আমাকে
কারণ আমি যে সীমিত জনমানবের অনচ্ছ নরখে।

প্রেমের সূর্য

নীলান্তরে উদিত হয়েছে প্রেমের সূর্য
রোদ্দুরে প্রবাহমান ভালবাসা,
সাদা মেঘের কূলে উঠেছে জেগে
দুটি প্রাণের একই আশা।

মধুর এই দুই প্রাণের সম্পর্ক
মধুময় তাদের জগত,
তাদের হাতে সৃষ্ট তাদের
স্বরণীয় প্রেমের একটি শপথ।

যে শপথে নেই অপ্রবিত্রতা
নেই চলনার চিহ্ন,
প্রেমের সূর্য তাই মেলেছে ডানা
নীলান্তরে হয়ে ভিন্ন।

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৩

সময়ের পরিক্ষা

অগ্নিময় এক উত্তাল দুপুরে অপেক্ষমান সময় করে যাচ্ছে অপেক্ষা
চলছে সময়ের ধীর গতি, এক মিনিটে পাড় হচ্ছে এক বছর,
অলস এই সময়ের অভিমানী ভাবমূর্তি বিস্তৃত দুরূহময় সেই পরীক্ষা
যেখানে সময় হয়েছে প্রবর্তনে গুপ্তচর।

সময়ের এই পরীক্ষার কঠিন সব নিয়ম, অসাধ্য পরীক্ষার্থীর বিজয়
যেখানে পরীক্ষার প্রতিটি প্রধা-প্রণালী সময়ের হাতে সৃজন,
বড় নির্দয় সময়ের প্রশ্ন, অভাগাকে দেয়না পদতলে আশ্রয়
সময়ের এই লীলাখেলায় পরাজিত পরীক্ষার্থীর স্থানান্তরিত হয় নির্জন।

সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা এই তিনটি কাঁটা সময়ের পরীক্ষায় ক্ষিপ্তবেগে চলমান
অনুকরণ করা যায়না তাদেরকে, নাগালের বাহিরে তাদের অবস্থান,
কারণে-অকারণে তাদের জন্য সময় হয় না স্থীর, সে চলছে এবং সে বহমান
প্রতিহত করা যায়না সময়ের এই গতিকে, তাই বাধ্য সবাই, নেই এর অবসান

রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৩

আমি ৪

এই তো বছর তিনের আগের কথা, আমি ছিলাম ধূমপায়ী,
সিগারেট ছিল খেলনা আমার, কিন্তু নয় চিরস্থায়ী।
নিতাম তখন আমি নিকোটিনের অদ্ভুত সেই স্বাদ ,
জানতান এটা ছিল বিনাশসাধক, মরনের এক খাদ।
তামাক পাতার আগুন পুরা ধোঁয়া প্রবেশ করাতাম ফুসফুসে,
বিষ করতাম সেবন আমি প্রতিটি নিশ্বাসে।
কিন্তু আজ আমি নেই পূর্বেকার আমি, আমি আজ নেশামুক্ত,
নই আমি আজ সিগারেটের নেশায় ধূমপানে সংযুক্ত।

শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

আমি ৩

আমি বন্ধী আমার কবিতার জগতে,
অক্ষর দিয়ে ছন্দ সাজাতে।
কাগজে-কলমে ও জল রঙ্গে,
সাজাই পৃথিবী আপন ডঙ্গে।
আঁকাই আমি সবুজের ছবি,
কলম হাতে আমি কবি।
নানা ধাপে আনি বর্ণ,
সৃষ্টি আমার সমান স্বর্ন।
সূচনা করি সৃষ্টির রহস্য,
দুহাতে বনন আমার শষ্য।
শষ্য আমার হল কাব্য,
সভ্যতার বিকাশে আমিও সভ্য।

শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৩

সৃষ্টার সৃষ্টি

ধরণীর এই সুন্দর রূপ
নীল সাগরের ডেউ,
আকাশ পানে রয়েছে কে
জানো কী তোমারা কেউ ?
সর্বখানে কার হুকুম চলে
জানো কী মানবজাতি,
কার ইশারায় রাত্রি নামে
প্রভাতে না ফুরায় গতি ?
পাখীর কন্ঠে মধুর সুর
ভেসে আসে গান,
মাটির দেহে করেছে কে
প্রাণের অস্তিত্ব দান ?
গাছের ডালে ধরে ফল
জমিতে হয় ফসল,
মৃত্তিকায় ক্ষমতা কে দিয়েছে
নকল মুক্ত আসল ?
আশরাফুল মাখলুকাত হয়েছে সৃষ্টি
কার এই অবদান,
সৃষ্টা তোমার হবে না শেষ
সৃষ্টির গুণোগান ।।

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৩

নদী

নদীতে স্রোত হয়ে এসেছিলে
চলে গেলে নদীর স্রোতে ভেসে,
হারিয়ে গেলে সাবলীলভাবে
একটু কাছে এসে।

কিছু কথা রেখে গেলে
ক্ষুদ্রাকার নদীর তীরে,
কথাগুলো আটক ভাঙ্গা পাঁড়ে
অজস্র বালুকণার ভিড়ে।

নদীর এক পাঁড় হতে অন্য পাঁড়ে
দূরত্বের নেই সীমা,
গভীর জলে নদীতে চাইলে
যায়না সহজে নামা।

নদীর গভীরতার গভীরে
পানি শুকিয়ে খরা,
হাটু জলে নদীর কূল
জানি না কী দিয়ে গড়া ?

নদীর মুখ বলে না কথা
বলেনা নদীর চোখ,
স্রোতের জলে গেলো ভেসে
নদীর সমান্তরাল বুক।

সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৩

চারদেয়ালের ভেতর ও তার বাহির

পরিবেশ এখন শান্ত,
বাহিরে বৃষ্টি ভেজা বাতাসের আসা যাওয়া,
চারিদিকে পরেছে নিরবতার নিরর আলোরন,
নেই এখন এক চুল পরিমাণ শব্দ,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

পরিবেশ প্রতিকূলতার ছায়া মুক্ত,
সূর্যের কড়া রোদ্দুর হয়েছে ক্লান্ত,
দিনের আলোর ঘটেছে অবসান,
নেই এখন পৃথিবীতে কর্ম ব্যস্ততার চিহ্ন,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

সময় এখন মধ্য রাত,
আমার প্রিয় মানুষেরা এখন গভীর ঘুমে,
উনারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজেদের স্বপ্ন জগতে,
নেই এখন তাদের মধ্যে নিদ্রাহীনতা,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

আমার বিড়াল ছানাটিও এখন চুপটি মেরে ঘুমাচ্ছে,
মা বিড়ালটি চলে গেলে ছানাটিকে একা ফেলে,
সে আসবে ভোরবেলা তার ছানাটির সাথে দেখা করতে,
নেই এখন মা বিড়াল ও ছানাটির মধ্যে তেমন আদরের সম্পর্ক,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

পাহারাদার কুকুরগুলা পাহারা দিচ্ছে সমগ্র এলাকা,
কুকুরেরা পায়চারি করছে প্রতিটি বাড়ির সম্মুকে,
দলবদ্ধভাবে তারা করে যাচ্ছে তাদের কাজ,
নেই এখন তাদের মধ্যে ঝগড়া,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

ঘরের সামনের রাস্তা এখন নিরব,
রাস্তাগুলো মানুষের গন্ধ শূন্য,
সেখানে চলছে না কোনো যানবাহন,
নেই এখন বাতাসে সেসব যানবাহনের মিশ্রিত কালো ধোঁয়া,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

জানালা দিয়ে দেখলাম রাস্তার পাশে দোকানটি বন্ধ,
দোকানের প্রবেশ ফটকে ঝুলে রয়েছে বিশাল একটি তালা,
শুধু দোকানের সম্মুকে লাগানো রয়েছে আকর্ষণীয় যত পোস্টার,
নেই এখন সেসব পোস্টার দেখে সমালোচক খরিদ্দারের উপস্থিতি,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

জানালা দিয়ে দেখলাম আমি আরও অনেক কিছু,
দেখলাম রাতের অন্ধকারের রং কালো,
সে অন্ধকারকে আলোকিত করেছে রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক বাতি,
নেই এখন শুধু সেই বৈদ্যুতিক বাতির খুঁটির নিচে দাঁড়ানো চানাচুরওয়ালাটি,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

অবশেষে ফিরে গেলাম আমার অগোছালো বিছানায়,
যার চারপাশে দন্ডায়মান রয়েছে চারটি দেয়াল,
এবং চারদেয়ালের এক কোণায় আমার অবস্থান,
নেই এখন শুধু আমার মধ্যে ঘুমের চাহিদা,
আর এমন এই সময়ে আমি আটক চারদেয়ালের তৈরি শয়ন কক্ষে।

শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৩

রাজনীতি

উন্মুক্ত আজ রাজনীতির মুক্ত ময়দান,
কাঁটা তারে অবরুদ্ধ এক রাজনৈতিক উদ্যান।
সে উদ্যানে কেউ জুয়াড়ি, কেউ খেলোয়াড়,
কেউবা অভিনয়ে অগ্রনেতার জোয়ার।
কেউ করছে সেইখানে নিজ স্বার্থে দুষ্টু রাজনীতি,
প্রশাসনের হস্তে লাগিয়েছে তালা আজব সেই নীতি।
কেউ আবার জনকল্যাণে প্রতিনিহিত ন্যস্ত,
মা-মাটির সেবায় তারা পূর্ণভাবে ব্যস্ত।

অন্যদিকে অসৎ ব্যক্তিরা ক্ষমতার অপব্যবহারে করে রক্তপাত,
গরীব মানুষেরা মাঠে মরে, সাহায্যের পায়না একটু খানি হাত।
হরতাল, বিক্ষোভ, ধর্মঘটে হচ্ছে তারা শিকার,
এই দেশেতে নেই যেন তাদের স্বীয় অধিকার।
তারা কী নয় নাগরিক স্বাধীন এই দেশে,
যেদেশেতে সজ্জিত রাজনীতি ভিন্ন দুটি বেসে।

শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৩

গল্প

গল্পের নেই শুরু, নেই শেষ
এবং গল্পটি অলিখিত,
গল্প চলছে তার নিজস্ব গতিতে
যেন গল্পটি জীবিত।

এই গল্পে নাট্যকার আমি
করে যাচ্ছি তাই অভিনয়,
কিন্তু আমি অসুখী এই গল্পের অংশ হয়ে
কারন গল্পটি শেষ হবার নয়।

গল্প চলছে, আমার অভিনয় চলছে
চলছেনা শুধু স্থিতিশীল ভুবন,
যেখানে গল্পের হয়েছিল প্রসার
সেখানে আজ সংলাপহীন জীবন।

জীবনটা তাই অচেতন
গল্পের নির্মম পরিহাসের শিকার,
কিন্তু এই গল্পের রচনা করেছি আমি
তাই জানাই নিজের উপর নিজে ধিক্কার।

বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

রাজকন্যা ও স্বপ্নকন্যা

আমার মন ঘরে রাজকন্যার স্থায়ী বসবাস,
কিন্তু রাজকন্যা আমার নয় বলে হয়নি প্রেমের নাশ ।

প্রেম আমার সীমাহীনের মধ্যে সীমিত,
রাজকন্যার সৃতি থাকবে অনন্তকাল জীবিত।

কিন্তু সে এখন অনেক দূর, ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে,
তবুও যেন সে পেতেছে আসন শূন্য আমার ভেতরে।

জানি সে আমার নয়, কিন্তু আমি হয়েছি তার,
ভাবনার উঠানে ঘটেছে তাই তারই সমাহার।

অন্যদিকে জেগেছে আমার মনে স্বপ্নকন্যার দেখা,
সে থাকে স্বপ্নদেশে আর ব্যস্তবে আমি একা।

মনের ঘরে এখন অন্য কক্ষে স্বপ্নকন্যার স্থান,
কিন্তু রাজকন্যা আমার প্রথম প্রেমের প্রথম জয়গান।

মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৩

স্বপ্নকন্যা এবং আমি ৮ (স্বপ্নকন্যার পরিচয়)

তুমি মেঘলা আকাশে কালো মেঘ,
বৈশাখী ঝরে বয়ে আসা জোর বাতাসের বেগ।
তুমি চাঁদনি রাতে রহস্যময় অন্ধকার,
মায়াবী হাসিতে হাস্যকর তোমার বদ্ধ দুয়ার।
তুমি অরণ্যের মধ্যখানে বন্য সবুজ,
দিগন্তের শেষাংশে তুমি হলে নিখোঁজ।
তুমি কোকিলের কন্ঠে আনন্দের সুর,
গ্রীষ্মের কড়া রোদে তুমি রোদেলা দুপুর।
তুমি সাগরে বয়ে আসা সমুদ্রস্রোত,
অচিন দেশ হতে আগ্রত তুমি অচেনা এক দূত।
তুমি হিমালয় থেকে পতীত হওয়া নরম বরফের আস্তারন,
গোলাপের পাপড়িতে যেন তুমি কোমলতার বিবরণ।
তুমি সৌন্দর্যে সজ্জিত এক অপূর্ব সাজ,
নকশী কাঁথায় বুনে উঠা সুই সুতায় তুমি কারুকাজ।
তুমি প্রেমের বন্দরে নির্বাক প্রেমে ভাস্য পূর্বাভাস,
শীতলার শীতল শিহরনে তুমি অসমাপ্ত বিশাল সেই আকাশ।
তুমি নিশি কাটানো ফুল শয্যায় শয়ন সঙ্গ,
আগুনজরা রুপে আগলে রাখা প্রতিটি রুপসী তোমার অঙ্গ।
তুমি আলতো ছোঁয়াতে ভেসে উড়া বাতাসে সাদা কাশফুল,
কাজলকালো দীর্ঘ বেনীতে নারিকেল তেলে সুবাসিত তোমার আঁচড়ানো চুল।
তুমি স্বপ্নদেশে বসবাসকারী সুন্দরী যুবতি রুপসী এক কন্যা,
যেন তোমার যৌবনে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে আসা অফুরন্ত রূপের বন্যা।
তুমি সেই রুপের বন্যায় ভেসা আসা সবুজ ঘাসের কচি পাতায় বিরাজমান একফোঁটা শিশির বিন্দু,
জীবনের এই চলার পথে তুমি সর্বশেষ এবং সর্বস্ব স্থায়ী একমাত্র বন্ধু।
তুমি হলে সেই অর্ধাঙ্গিনী যার হাতের উপর থাকবে আমার হাত,
প্রেমের ভেলায় ভালবাসার খেলায় ব্যস্ত তুমি নিদ্রাহীন আমার অশান্ত রাত।
তুমি জাগ্রত অবস্থায় দর্শন করা প্রতিটি আমার স্বপ্ন,
ঘুমন্ত বুকে তোমার পায়ে নূপুরের ধ্বনি সর্বদা ধ্বনিত হয় ভিন্ন।
তুমি হলে শেষ গন্তব্যস্থান যেখানে আমার শেষ অশ্রয়,
চলনায় চলনশীল মায়াবী চোখে চলমান যত চঞ্চল তোমার প্রশ্রয়।
তুমি রাত্রির কালো আকাশে অসংখ্য তারোকার মধ্যমনি একখানা চাঁদ,
আদরে স্পর্শ করা পীট হতে তোমার কোমল মসৃণ মোলায়েম কাঁধ।
তুমি আমার বিনোদনের আয়োজন দৈনন্দিনের প্রয়োজন,
অগুছালো জীবনে তুমি একান্ত অপনজন।
তুমি পরাজিত হৃদয়ের একমাত্র বৈধ দাবিদার,
দেহে-মনে তোমার অগণিত অধিকার।
তুমি মেঘ না চাইতে নভস্থল হতে পড়ন্ত বৃষ্টি,
আলতোভাবে সঙঘৃষ্ট হওয়া নরম ঠোঁট তুলনাহীন মিষ্টি।
তুমি অফুরন্ত সুখে সুখময় জীবনের জীবন্ত প্রতিটি প্রহর,
দোলনার মত দোলন্ত তোমার তরবারি সদৃশ ধারালো ক্ষিপ্ত কোমর।
তুমি অতীতে হাজারো সময়জুড়ে ফেলে আসা আমার পুরনো যত ভাবনা,
রঙ্গিন রঙ্গে তুমি রাঙ্গায়িত আমার ভবিষ্যৎ আঙ্গিনা।
তুমি সৌন্দর্যে সজ্জিত বাগানে ফুটন্ত নিষ্পাপ পুষ্প হতে ভেসে আসা মনোরম সুগন্ধ,
সে সুগন্ধে সুবাসিনী তুমি প্রাণোবন্ত দিগন্তের সীমাহীন প্রবন্ধ।
তুমি পহেলা বৈশাখে বরণকরা উল্লাসিত বাংলা নববর্ষ ,
সহবাসে উদ্দীপ্ত হওয়া তোমার অগ্নিময় উত্তাল স্পর্শ।
তুমি শীতল ছায়া দানকারী ছায়াময় এক বৃক্ষ,
ভালবাসায় উতসর্গ তোমার স্পন্দিত হওয়া বক্ষ।
পরিশেষে তুমি এই কবিতা লিপিকারের অস্তিত্বহীন রাণী,
স্বপ্নদেশের কল্পনার আলোকে বর্ণিত এই কবিতার প্রতিটি লিখিত বানী।