রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কে আছে আমার

আমি ছাড়া আর কে আছে আমার
কেউ নাই, কেউ তো নাই,
জগৎ সংসারে কে আছে এমন
যার মধ্যে নিজেকে হারাই।

কে আছে এমন যার সাথে আমি
আপন মনে মিশবো সুখে,
যার চেহারা প্রতিফলিত হবে
আমার প্রতিটি নিয়তির সম্মুখে।

নিয়তি আমার দেয় অভিশাপ
অভিশাপ দেয় সমগ্র পৃথিবী,
সবুজ প্রকৃতির নিঠুর আচরণে
নিষ্টুর একাকীত্ব রাখে নিজের দাবি।

বিষ হয়ত সেবন করিনি কখনো
সেবন করেছি একাকীত্বের স্বাদ,
কেউ নাই আমার, কে আছে আর
যার মধ্যে পাবো নিজের সাধ।

শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কান্দে পরাণ অসুখে

আমার প্রেম আজ অন্যের ঘরে
সাজাইলো নতুন সংসার,
তবু কেন আমি বারবার
বলি তাকে দরকার।

আমি কেন পারি না থাকতে
ত্রীভুবনে তারে ছাড়া,
কষ্টে আছি কষ্টে বাঁচি
কবিতা লিখি ছন্দহারা।

সে তো থাকে অন্যের ঘরে
হয়ত আমায় মনে নাই,
আমার ভেতর বসত তার
ভালবাসি হয়ত তাই।

মনের ডালে পাখির নাচন
নাচে মনে নর্তকী,
কান্দে পরাণ সুখে দূখে
ফোটে না ফুল সূর্যমূখী।

কাদি না হাসি না
আমি থাকি নিরব,
মলিন মুখে অসুখে
ভীষণ কলরব। 

কথাগুলো পাখির ডানা
মেলায় নিজ পালক,
সুরেলা প্রেমে আমি একেলা
খোঁজি নিজের হক।

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তোমাতেই প্রেম ৪

অল্প অল্প করে কাছে আসা,
এইতো ভালবাসা।
মিষ্টি কিছু কথা বলা,
হাতে হাত রেখে চলা।
স্বপনে দেখা করা,
কলম হাতে লিখি ছড়া।
মনে মনে গাওয়া গান,
অল্পতেই অভিমান।
এনে দাও প্রিয় ফুল,
বেড়াতে যাই নদীর কুল।
চিরকুটে লিখে রাখা,
ভালবাসা অশ্রু মাখা।
তারপর বেদনা,
নিজ মনে সান্ত্রণা।
ফের একা পিছু চলা,
ভালবাসি হয় নি বলা।

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

রাজকন্যার মন ভালো নেই

আজকে তোমার ঝরছে অশ্রু
বৃষ্টি হয়ে নয় তবে,
ঝড়ের বেগে অশ্রু ঝরছে
বুকের আকাশটাতে।
বিদুৎ চমকাচ্ছে শব্দের আগে
শব্দ হারিয়েছে ভাষা,
পাগলা হাওয়া এদিক-সেদিক
করছে আসা-যাওয়া।
মন পাখি পিঞ্জিরাবদ্ধ
আহত পাখনা ভেঙ্গে,
প্রাণের সখা অন্যস্থানে
কান্দে ক্ষনে ক্ষনে।
আমি না হয় তৃতীয় পুরুষ
কষ্ট বুঝি না ভালো,
বুঝি তবু তোমার মন
আঘাতে জর্জরিত।
রক্তাক্ত মন বাহিরে শান্ত
ভেতরজুড়ে তুফান,
কাল-বৈশাখী ছোবল মারে
প্রেমিক মনের স্থানে।
অন্যের ঘরে তুমি যে আজ
উদিত নতুন সূর্য,
তিমিরে অস্পর্শ
নতুন জীবনের তথ্য।
এলোমেলো গাছপালা
আকাঙ্খায় ডাকে,
শাখা-প্রশাখায় হচ্ছে তুফান
পঙ্গু জীবন শোষিত হয়ে।

নিরব কবি

কবিতায় কবিতায় সংঘর্ষ 
হচ্ছে রক্তপাত,
নিরব কবি কবিতায় ভাষায়
লিখছে মনের আঘাত।

চোখের অশ্রু ঝরছে পড়ে
কলমের কালি হয়ে,
কবির মনে কবিতা
সুখ-দুঃখ নিয়ে।

বিরামচিহ্নের নেই বিশ্রাম
কবিতা ঘিরে কাজ,
কে জানে কি হয়েছে
কবির মনে আজ।

শোন কবি ডাকি তোমায়
কেনো লিখছো কবিতা,
কবি বলে কবিতায় ভাষায়
সাজাই জীবনের অভিজ্ঞতা।

শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তোমাতেই প্রেম ৩

রাত কাটে রাত,
হাতে রেখে হাত।
ঘুম ঘুম চোখে তাকাই,
যদি তুমি না আসো ফিরে,
ভাবি ভয়ে ভয়ে 
দেখিতে যদি না পাই ভীরে।
রাত্রির আলোয় চলে গেলে তুমি
ঘুমের দেশে হেসে হেসে,
বিদাই জানাই আরো একবার
কবিতার খাতায় অংক কষে কষে।

বলা না বলা তোমার কথাগুলো

ঝোঁক বা আবেগের বশে নয়, নয় মিথ্যা ছলনার আশ্রয়ে,
আজ শুধু মনের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষার উন্মেষ সাধনের সাধনায়
চুপটি মেরে শুনবো নির্বাক মুখে 
বলা না বলা তোমার প্রতিটি কথাকে।

একে একে পরখ করবো ভালবাসার প্রকৃতরূপে
গুনে গুনে দেখবো চোখের দাঁড়িপাল্লায়
কেমন হবে ভালবাসার পরিমাণ।

তারপর তীক্ষ্ণতায় প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে 
অনুমানসিন্ধ সমতার প্রদর্শন ঘটিয়ে 
একাকীত্বের সংকীর্ণতার গন্ডি পার হবো
তোমার কথার পিঠে কথা চেপে।

হোক ভুল মিথ্যে প্রবোধ অথবা দুরুহ ব্যাপার
তবুও পুনঃ পুনঃ শুনবো একে একে 
উড়ন্ত বাতাসে তোমার কথাগুলোকে আজ।

শিকারি হয়ে আঁকড়ে ধরে 
তালাবন্দি করে রাখবো মনের হাল্কা খাঁচায়।

আর যখন তুমি থাকবে না কাছে, আসে-পাশে বা জীবনে
তখন নিজের মনে নিজে প্রবেশ করে 
চুপটি মেরে শুনবো একে একে
তোমার বলা না বলা কথাগুলোকে।

ঘুম ঘুম দু'টি চোখ

ঘুম ঘুম চোখে জেগে থাকি আঁধারে,
পারিনা ভুলতে তবু প্রথম প্রেম তোমারে।
ভেবে ভেবে এক করি অশ্রুর সাথে রাত,
অসহ্যকর যন্ত্রণা বুকে সহ্য করে আঘাত।
ভাষাহীন কণ্ঠে বলি অগুছালো মনের ধ্বনি,
রাজ্যজুড়ে খালি খালি শুধু, কোথায় পালালে রানী।
পালালো সাথে শান্তি সুখ, হাসিময় মম মুখ,
জেগে থাকে আঁধারে ঘুম ঘুম দু'টি চোখ।

সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

মোর লাগি প্রার্থনা

তোমার মনের দক্ষিণ পাশে 
আমার দিও কবর,
অন্তত একবার প্রতিমাসে 
আমার নিও খবর।
খোদার কাছে নামাজে তুমি 
করিও প্রার্থনা,
কমে যেন যায় কবরে 
আযাবের যন্ত্রণা।
বলিও দোয়ায় দিও তার মনে 
পরলোকে শান্তি,
ক্ষমা করিয়া দিও তাকে খোদা 
যদি করে ভূল-ভ্রান্তি।
দোযখের আগুনে পুড়াইও না 
কমল তার দেহ,
সেও ছিল ভালো একদিন
জানিত না কেহ।
মুনকার-নাবীরকে বলিও খোদা 
প্রশ্ন করিতে সহজ,
মৃত্যূর আগে সেও একবার 
চাইছিল করিতে হজ্জ।
পাপের পাহাড় মালুম ছিল 
হয়েছে ভীষণ ভারি,
খোদা তাকে রেহাই দিও 
সেওতো বান্দা তোমারি।

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

চাই প্রেম শত শত

জানি না আমি করেছি প্রেম
কেমন হবে কত,
অল্পতে ভরে না প্রাণ
চাই করিতে আরো শত শত।
খোঁজে পাই প্রেম পথে-প্রান্তরে
দেখি প্রেমের মুখ,
হাতছানি দেয় কড়া রৌদ্দুরে
বৃষ্টিতে চাই আসুক।
আসুক প্রেম ফাল্গুনে
আষারে অথবা শ্রাবণে,
ভাসিয়ে নিয়ে যাক চলে প্রেম
হৃদয় ভাঙ্গানো প্লাবনে।
আসুক জল করে টলমন
চোখের জলে হবে স্নান,
প্রেম জানি না করেছি কত
বেসুমার পরিমাণ।
অল্পতে ভরে নাহি সীমা
চাই প্রেম শত শত,
তৃষ্ণা প্রেমের মিঠে না অক্লেশে
অসীমতায় অবিরত।

প্রিয়তমা তুমি নীল

স্বপ্নের নীল ঠিকানায়
পাঠালাম নীল চিঠি,
রাতের নীল জোৎস্নায় জোনাকি 
জ্বলে মিটিমিটি।
নরম নরম স্বপ্নের হাত
হাত বাড়িয়ে বলে,
যাবে নাকি নীল ঠিকানায় 
নীলান্তরে চলে।
একরাশ প্রেম 
ডাক দিয়ে যায়,
উজ্জ্বল নীল তারকা 
বুক পেতে চায়।
কী আছে লিখা 
নীল প্রেমের ভাষা-বর্ণ,
সপ্নিল সময় কৌতুহলে 
পুষ্প মেলায় কর্ণ।
জানতে চায় জগৎ সারা 
প্রেমের মুক্ত সুবাস,
নীল ঠিকানার ঠিকানা 
জানে শুধু নীল আকাশ।
নীলাঞ্জনা নীল তুমি 
প্রেম নামে ডাকি তরে,
বসতি কোথায়, যাপন করো 
কোন নগরীর ধারে।
আমার নগরী নীলপরী 
রূপে-রঙ্গে অমিল,
ভালবাসি একেলা হাসি 
প্রিয়তমা তুমি নীল।

সাময়িক প্রেম

মন ভালো নেই মনের আকাশে,
কাজল কালো মুখ মেয়েটির উকি দেয় বাতাসে।
ডাক দেই আমি তারে সুনয়না শুনো তুমি,
দেখা দাও কাছে এসে ছোঁয়ে দাও মরুভূমি।
প্রেমের বীজ বপন করো শূন্য বালিময় বুকে,
চলে যেও না হাসি দিয়ে রাঙ্গালো নীল চোখে।
আকাশের দিকে চাহি তাকিয়ে প্রেমের বৃষ্টি হলে বর্ষন,
প্রেম নিয়ে তুমি থাকো বহুদূরে ডাকে তবু প্রেম সারক্ষণ।
সেই প্রেম মোর না চায় হতে, অন্যজনারকে চায় প্রিয়,
আমি বলি শোনো মন যাযাবর প্রেম সে, তাকে বিদায় দিয়ে দিও।

অধিকার স্থাপনের অধিকার

অন্তরের গভীরে সূক্ষ্মতম স্থানে
নামটি তোমার লিখে রেখেছি নিখূঁতভাবে।

নামটির মালিকানাসত্ব একান্ত আমার,
তাতে হক বা অধিকার স্থাপনের অধিকার  
আমি ছাড়া নেই কারো আর।

যদি কখনো কোনো দুঃসাহসী 
সেই নাম কেড়ে নিতে চায়,
তবে তাহলে তাকে বলে দিও 
এই নামের দলিল আমার নামে সত্যায়িত।
এখানে অধিকার স্থাপনের অধিকার 
আমার কাছে বোতল বন্দী।

সাথে বলে দিও দুঃসাহসীদের
ইহা ব্যর্থ চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তারপরো কোনো দুঃসাহসী যদি
বল প্রযোগ করে নামটি দখলের প্রয়োজনার্থে।

তখন তাকে দেখিয়ে দিও 
তোমার কমলতম আঙ্গুল দিয়ে 
আমার অন্তরের গভীরের সূক্ষ্মতম স্থান।

যেখানে পাখির দুরন্ত ডানার মত 
উড়ে-বেড়ায় মুক্ত আকাশে 
তোমার নামের প্রতিটি বর্ণ, নামের অর্থ, সারমর্ম,
ও তার প্রতি একান্ত আমার অধিকার স্থাপনের অধিকার।

নেশা প্রেমের মৃত্যু

হটাৎ করে বেজে উঠলো কলিং বেল,
দরজা খোলে রিয়া দেখলো, 
দাঁড়িয়ে আছে রুবেল।
কি ব্যাপার রুবেল, 
অসময়ে-অবেলা কেন আসলে আমার বাড়ি,
যাচ্ছিলাম পাশ দিয়ে, 
তাই ভাবলাম দেখে যাই তোমায়
তুমি অবলা নারী।
অবলা নারী নিশ্চই আমি, 
ভালবাসো না আমায় মোটে,
ভালবাসি রিয়া, বারবার চলে আসি তাই ছুটে।

দেখতে এসেছো ভালো কথা কিন্তু বাবা এখন ঘরে,
চলে যাও তুমি লক্ষিটি আমার দুয়ার সরে।
চলে যাবো একদিন, নেবো বিদায় পৃথিবী হতে,
খোঁজবে তখন পাবেনা আমার, ফিরবে খালি হাতে।
অমন কথা বলেনা প্রিয়, হয়েছো দুষ্টু ছেলে,
দেখা হবে আজকেই, আসবো বিকেলে।

আসবো আমি লাল শাড়িতে, হাতভরা লাল চুড়ি,
খাবো একসাথে দুজনে দুজনার মিষ্টি ঝাল মুড়ি।
ঝাল মুড়ি হবে মিষ্টি, কি করে বল রিয়া,
তোমার প্রেমে সব মিষ্টি বুঝোনা কেন প্রিয়া।
আচ্ছা এখন যাও তুমি, জানাই মিছে বিদায়,
বিকেলের অপেক্ষায় সময় যেন পাড় হতে না চায়।

অবশেষে বিকেল বেলা দুজন কাছে আসলো, 
দুটি মন একসাথে কানামাছি খেললো।
খেলার ছলে রিয়া বললো 
আচ্ছা রুবেল শরীর হতে তোমার আসছে কেন সিগারেটের গন্ধ,
ইদানীং তুমি সিগারেটের নেশায় হয়েছো ভীষণ অন্ধ।

এই তো রিয়া আর কিছু দিন, সিগারেট ছেড়ে দেবো,
যেই দিন তোমায় আমার ঘরেতে বউ বানিয়ে আনবো।
আচ্ছা বাবা অনেক হয়েছে, স্বপ্ন দেখা শিখেছো খুব,
আশা আমার একটাই মনে, তোমাকে শুধুই পাবার লোভ।

আমার এখন যেতে হবে, এসেছে গগনে সন্ধ্যা,
যাবার বেলায় কিনে দিও তোমার প্রিয় রজনীগন্ধা।
একগুচ্ছ ফুল হাতে রিয়া ফিরলো তার বাড়ি,
মিষ্টি সময় চলে যায় দ্রুত, ফুরায় তারাতারি।

রিয়ার বিহনে ছিল সিগারেট রুবেলের আপন বন্ধু,
খেতো সিগারেট একসাথে সমপরিমাণ এক সিন্ধু।
শত মানা করেছিল রিয়া, না করতে এই নেশা,
রুবেল বলতো এই নেশাতেই জীবন্ত ভালবাসা।

এক বছর পর একদিন দুঃসংবাদ আসলো রিয়ার কানে,
রুবেলের নাকি হয়েছে ক্যান্সার ফুসফুস নামক স্থানে।
ডাক্তার বলেছে সময় এখন বেশি নেই বাকি,
প্রাণ পাখী যখন-তখন পালাবে দিয়ে ফাঁকি।
ভেঙ্গে পড়লো দূর-দূরান্তে নীল ওই আকাশ,
অবুঝ মন চায় না প্রেমের সর্বনাশ।

কিন্তু রুবেল মেহমান দু'দিনের এ জগতে,
চিরবিদায় অপেক্ষমান নিজস্ব তার মতে।
রিয়ার কান্না কে দেখে, ঝরছে অভিরাম,
ক্যান্সারে রুবেলের মৃত্যু হল, চিরস্থায়ী বিশ্রাম।

করেছিল রিয়া শত মানা ছাড়তে এই নেশা,
মৃত্যু আসে কেড়ে নিল প্রেমের পরিভাষা।
রুবেল বুঝেনি সময় থাকতে প্রেমিকার অমূল্য প্রেম,
রিয়ার অন্তরে আজো সজ্জিত
মৃত মানবের ছবির ফ্রেম।


"কেমন হয়েছে জানি না, তবে সাধ্য মত গল্পের মতন একটি কাহিণী ভিত্তিক কবিতা লেখায় প্রয়াস চালিয়েছি"