বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৪

চিরনিদ্রা

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য না জাগে।

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত পাখি না ডাকে।

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত সকাল না হয়।

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত অন্ধকারে পাবো না ভয়।

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত মৃত্য দেহের হবে না দাফন।

আমি ঘুমিয়ে থাকবো ততক্ষণ পর্যন্ত
যতক্ষণ পর্যন্ত ভুলবে না কেউ 
আমিও ছিলাম একজন।

অনুভূতি: ৭

চলার পথে দেখা হলে
ভেবে নিব তুমি ফিরে আসো নি,
তুমি এসেছো ক্ষণিকের বন্ধু হয়ে।

দু'দিনের মেহমান চলে যায় দু'দিন পর,
মেহমানরা খালি হাতে আসে না,
নিয়ে আসে দু'হাত ভরা উপহার।

তুমি ক্ষণিকের বন্ধু, এসেছো খালি হাতে,
শুধু সঙ্গে এনেছো ছিদ্র করা একটি ব্যাগ
আমার বুক হতে ভালবাসা নিয়ে যাবার জন্যে।

আমি খালি হাতে মেহমান বিদায় দেই না,
আমি তাদের দু'হস্ত ভরে দেই প্রেম,
তোমাকেও দিব তুমি ক্ষণিকের বন্ধু।

যাবার বেলায় ভরে দিব প্রেম 
তোমার ছিদ্র করা ব্যাগে,
তারপর প্রেম দিয়ে চলে যাবে তুমি 
অন্য প্রেমিকের বুকে।

তখন ব্যাগের ছিদ্র বয়ে 
পানির মতন ঝরবে ফোঁটায় ফোঁটায় 
তোমাকে উপহার দেয়া আমার প্রেম, 
টলে পরবে তোমার পদতলে 
মিলিয়ে যাবে বালিকণাদের ভিড়ে।

সেই ভিড়ে আমিও অপেক্ষা করবো
আবার কবে ক্ষণিকের বন্ধু 
আসবে প্রেম নিয়ে যাবার জন্যে।


কেন এত ভালবাসি তোমাকে

কী অদ্ভুত একটা প্রশ্ন "কেন এত ভালবাসি তোমাকে"
আসলেই তো কেন এত ভালবাসি?
এই প্রশ্ন আমি করি নিজেই নিজেকে।
আমি অজ্ঞাত কেন এত ভালবাসা তোমার প্রতি আমার?
এত মায়া, আবেগের টান, 
কেন বারবার তোমাকে পেতে চাই কাছে?
কাছে হতে আরো কাছে পেতে চাই,
জড়িয়ে ধরতে চাই তোমার গন্ধ।
কেন এত ভালবাসি তোমাকে
যতটা ভালবাসা নিজের প্রতি নেই নিজের?
তোমাকে কেন জানি না 
নিজের কাছে নিজের বিদাতা মনে হয়?
মন চায় সারাটি দিন, সারাটি রাত,
জীবনের সারাটি প্রহর করি তোমার আরাধনা।
তোমার ছবি টাঙ্গিয়ে রেখেছি 
কেন জানি না মনের দেয়ালে?
সেখানে আমার একটাই কাজ
সকালে সূর্য দেখার আগে 
মনের দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে তোমার মুখ দেখা,
তোমার সামনে নত হয়ে সেজদা করা।
যেন তোমায় না দেখলে, 
তোমায় কাছে না পেলে, 
তোমার গন্ধ নিজের শরীরে না মাখালে 
নিজের কাছেই প্রমাণিত হয় না আমি যে তোমাকে, 
শুধু তোমাকেই ভালবাসি।
চায়ের কাপে চুমু দেয়ার আগে 
নিজেরি অজান্তে চুমু দিতে হয় তোমার ঠোঁটে,
কেন জানি না এমন হয়?
ভীষণ ভালাবাসি বলেই হয়ত হয় এমন।
কিন্তু কেন এত ভালবাসি তোমাকে?
সেটা তুমি যতটা জানতে চাও
তারচেয়ে অধিক জানতে চাই আমিও।
নিজেকে প্রশ্ন করি বারংবার 
"কেন এত ভালবাসি তোমাকে" ?

মানুষ

একেক মানুষ একেক রকম, ভিন্ন রঙ্গ-রূপ,
কেউ আবার একটু বাচাল, কেউ নিশ্চুপ।
কেউ হয়ত অনেক মোটা, লম্বা অথবা খাটো,
বয়সে কেউ অনেক বড়, ক্ষুদ্র না হয় ছোটো।
কেউ নর, কেউ নারী, কেউ বানায় রাস্তা-বাড়ি,
কেউ পরে লুঙ্গি-শার্ট, কেউ সেলুয়ার এবং শাড়ী।
কেউ আবার দেখতে ভাল, কেউ দেখতে মন্দ,
কেউ হয় প্রতিবন্ধী, জন্ম থেকেই অন্ধ।
কেউ করে কর্ম ভাল, কেউ করে ভুল,
কারো মাথায় লম্বা, খোকড়া কারো চুল।
কেউ হয় রাজা-মহারাজা, কেউ কর্ম দোষে নষ্ট,
কেউ চলে সঠিক পথে,  কেউ পথভ্রষ্ট।
কেউ গড়ে সুষ্টু সমাজ, কেউ চায় ধ্বংস,
ভিন্ন কিন্তু মানুষ তবু মানুষেরি বংশ।

(হাতের পাঁচ আঙ্গুলের মতন মানুষও কখনো সমান হয় না)
(আমার আঁকা ছবি এবং আমার লেখা একটি ছড়া) 



আমার স্বপ্ন


একদিন আমি কবি হব
চির সবুজ স্বপ্ন,
বাকিগুলো হলে হবে
না হলেও গণ্য।

একদিন আমার কবিতাগুলো
সাজবে ঠিক প্রজাপতি,
উড়বে দোলে নিজ আনন্দে
সাড়া জাগাবে রাতারাতি।

একদিন সবাই এসে দাড়াবে
দেখবে বলে এক পলক,
সেই আশায় কবিতা লিখে
দিবা-নিশি এই বালক।

কবিতা দুই'শত

আজকে তোমাকে করি স্বরন অবিরত আমরন,
তুমিহীন আমার প্রতিটি লিখিত কবিতার ধরণ।
সেই তুমি মহিয়ষী নারী যাকে ঘিরেই কবিতা,
ক্যানভাসে অংকিত তুমি স্বপনীল চারুলতা।
এক এক করে লিখে গিয়েছি শত শত কবিতা,
আজকে তুমিহীন প্রাণে শূণ্য বিলীন সততা।
ধর্ম জ্ঞানে হয়েছি অন্ধ কোন মানবের আঘাতে,
দুষ্টু মন নষ্ট আজ কুচ্ছিত কালো রাতে।
আজ আমি বাঁধন হারা লাগামহীন প্রেমিক,
যমুনাল জলে চুক্ষ দু'টি করে চিকচিক।
বুকের গর্ভে ব্যথা আছে যত ততই ব্যথা পলকে পলকে,
ধীরে ধীরে শেষ ধ্বংস নিজের তৈরী নরকে।
সেই নরকে বসে লিখেছি কবিতা একে একে দুই'শত,
বলেছি বেদনা দিয়েছি সন্ত্রণা বুকের গর্ভে ব্যথা রয়েছে যত।
এর আগেও করেছি সংকল্প পাষাণ হৃদয়ে দুই'বার,
ঘৃণা করি তোমাকে লিখবোনা কবিতা আর।
মনের সনে হ্রদের টানে হয় না প্রেমের চুক্তি,
জানি তবু না মানি নেই সার্থক যুক্তি।
মাঝে মধ্যে আনমনে ভাবি নয়নে প্রয়ণে,
কবু তুমি আসলে ফিরে বাসাবো কোন স্থানে।
অন্ধকার আমার পথ পথের অসংজ্ঞাহিত গানে,
হয়ত আমার কবিতার জননী সেই কথাটি জানে।
মাঝে মাঝে নিজেই বলি নিজের অন্তরালে,
আবার কি ফোটবে প্রেম খন্ডিত শ্যামল ডালে।
অভিমানী তুমি অনুরাগী সেই কথাটিও জানি,
কবিতায় করি বাস,  জীবিত কিন্তু প্রাণহীন প্রাণী।
প্রাণের তিপ্তি কষ্টের ভিটায় মরে তিলে তিলে,
তোমার মন্ত্রের বশে বশ যাদুকরী মায়া জালে।
কেমনে সখী নিষ্টুর হব, নরম আমি ঠিক গলিত বরফ,
মধুর লাগে যখন সাজাই তোমার নামের তিনটি হরফ।
কালি নাই কলমে, কালি ছাড়া লিখি নাম,
সে নামে পাই বিদাতাকে জোপি যখন অভিরাম।
ছন্ধনাম দিয়েছিলাম ভালবেসে, রাজকন্যা সে আমার,
রাজ করে সাজ করে গলায় জড়িয়ে হাড়।
সে হাড়ে বেঁথেছিল সে আমারি দু'হস্ত,
সংগ্রামী আমি তার বিরুদ্ধে না চলে অভ্যস্ত।
চলার পথে চলি ভিন্ন মতে, নেই চালকের নিয়ন্ত্রণ,
যা চাই না পেয়ে যাই, করি অনিচ্ছায় গ্রহণ।
লোকে বলে আমি জানি না হাসে মানুষে কীরূপে,
আমি শোধাই নিজেরে আমি অশ্রুভরা জলকূপে।
মানি না যা সাধারণ মানব বিশ্বাসে করে মান্য,
আমার কাছে অপ্রিয় তাই হয় না সহজে গণ্য।
যদি আমার প্রেমের মানুষ সেই কারণটি জানত,
কাছে আসে দূরে থেকে নিরবে ভালবাসত।
ভালবেসে ভাল বাসায় থাকতো দু'টি মন,
একসাথে এক গানে গাইতো সারাক্ষণ।
সুর উঠত মধুর তালে নাচত কবিতায় নর্তকী,
কিন্তু বাস্ততে আমার সাথে প্রশ্ন করো ঘটছে কি।
প্রশ্ন করো কোনো উত্তর আছে কি আমার কাছে,
আমি বলি প্রথম কবিতা সর্ম্পক মোদের যাচে।
কি বলে ডাকি তারে প্রেম নাকি বন্ধু,
হয় যদি প্রেম তবে দিতে পাড়ি সিন্দু।
আর যদি সে চায় হতে প্রিয় বন্দু,
জেনে রাখো বৃত্তের জন্মস্থান তারি কেন্দ্র বিন্দু।
চারিধারে আবদ্ধ বিন্দু বৃত্তের মায়া জালে,
ঠিক সেই রূপে আবন্ধ আমি কাবিতার ছায়া তলে।
কবিতা আমার নির্বাক মুখে সুখ-দূখে কথা বলে,
ভাবনা আমার ভাবনা নদীতে ডুব দেয় গভীর জলে।
চলে-বলে-কৌশলে সাজে প্রেম হয়ে নতুন,
হাহাকার করে উজাল দেহ যাকে করেছি অন্তরে খুন।
সেই প্রেমের লাশ নয় কারো আর,
সে যে প্রথম প্রেম, প্রিয় প্রথমা আমার।
যার হস্তে হস্ত রেখে শিখেছি কবিতার ভাষা,
দু'শত স্তরে এসে বলি মৃত আশা।
নিরাশা নেই তবু,  মন জানি কাঁচা,
এই না হলে কেমনে বাঁচি না মরেও মরণের বাঁচা।
নিজেকে দেই স্বিকৃতি নিজে আধা মরা অন্তর,
অহত বুকে নিহত স্বপ্ন, ঘায়েল করলো ঝড়।
আসলো তুফান নিশ্চুপে, কেড়ে নিল যা ছিল,
বিনিময়ে যা চাই নি কখনো অকালে দিয়ে গেল।
নিরুপায় আমি কবিতার জননী নিলাম তার দেওয়া,
প্রবাহিত গঙ্গা ধারায় অবিরাম আসা-যাওয়া।
যেন সেই ধারায় বহে গুপ্ত মনের কথা,
লিখিত এখন অলিখিত প্রাচীন কালের প্রথা।
ভাঙ্গা মেঘের টুকরোগুলো বেঁধে রাখা শিঁকলে,
মুক্ত কিন্তু চার প্রাচীরে আটক রুঢ় খিলে।
ভাবি আমি কেমনে সাজি যুদ্ধা কঠিন যুদ্ধে,
স্বাধীনতার পিয়াস গুচ্ছিত ঘোর নিশানের মধ্যে।
পরাধীনতায় সিদ্ধ স্বর, মাদকে আসক্ত কণ্ঠনালী,
বাহিরে পরিপূর্ণ ভেতরটা আস্ত খালি।
বাহির থেকে যায় না দেখা অগণিত ক্ষুদ্র বালি,
আঁখির কোণে বহমান নর্দমার নোংরা নালী।
জানি আমার কবিতার জননী দূর্গন্ধে তাই আসেনা,
বাকবাকুম পায়রাগুলো গোমরা মুখে হাসে না।
রাগান্বিত শ্বাস-প্রাশ্বাস দ্রুত আসে-যায়,
নিজেই বলি নিজেকে হয়েছি মৃতপ্রায়।
লাশ নই তবু লাশ, অচেতন মুখ,
হাসে না, কাঁদে না কাজল কালো চোখ।
চোখের ভাবে অভাবের দেখা অভাবী একখান মন,
দুই'শত-তে এসে আজ বিস্মৃত সুলভ পণ।
বিক্রি করায় দায়ে দায়বন্ধ নিত্য নতুন কামনা,
কালো বাজারে কারবার গীতি-কাব্যের লেনাদেনা।
আকাশভরা খেলার মাঠে খেলে নেচে জোছনা,
গৃহত্যাগী অবেগে আজ খুয়া খুয়া খেলোনা।
খেলায় খেলায় অবেলায় উঁকি মারে স্মৃতি,
হারিয়ে হারানোর বেদনায় কাব্য লেখার রীতি।
জানি কবিতার জননী তুমি ভীষণ অসহায়,
ভাবি একা আঁকাবাঁকা গান গেয়ে যায়।
নেই আওয়াজ,  পরেছে বাজ,
হারিয়ে গেল কোথা তোমার লজ্জা- শরম আজ।
জানি আজ তুমি কর প্রেম পরপুরুষের সাথে,
আমার সাথে করলে প্রেম দোষ হয়ে যায় তাতে।
তোমার কথা ভঙ্গ করেছো তুমি নিজে,
ঘৃণা করি তোকে প্রিয় কবিতার মাঝে।
জানি তুমি পড় না আমার লেখা কবিতা,
শুনাই না নিজেরে তোমার তুচ্ছ গল্প কথা।
একে একে দুই হয় এই যদি হয় গণিত,
ভুলে যাবো এমন হিসেব সাজবো মন্দ পুরোহিত।
পূঁজো করবো মন্দিরে যে মন্দিরে তুই নাই,
তোর সৃষ্টির সৃষ্টিতে ফিরে আসতে না চাই।
সৃষ্টি করবো নতুন জগত হব নতুন স্রষ্টা,
ভুলে যাবো কবিতার জননী বলা অন্তিম কথাটা।
লিখে লিখে নতুন করে লিখবো আরো দুই'শত,
যা বলার তাই বলবো অবিরাম অবিরত।
নিজের পথে নিজের রথে  হব জানি ধ্বংস,
স্বীকার করি নিঃস্বার্থে কি কবিতার উৎস্য।
গঙ্গা জলে টলমল করে শিশির কণা,
মাতাল কর্ণে কর্ণাপাত নিঃস্বার্থ সুফিয়ানা। 
নিঃস্বার্থের টানে গানে গানে মিলন মধুর হয়,
বাস্তব তবে অন্য রকম নাট্য অভিনয়।
নাটক হলে ভিন্ন কথা, সে আলাদা এক জিনিষ,
চুপিচুপি খায় লুকিয়ে প্রাণনাশক বিষ।
বিষের বিষে মিশ্রিত কবিতা দুই'শত,
বলে যাবো না বলা কান্না আছে যত।
লোচনে সূচন করি হরেক মতামত,
চাই না ফিরে তাকাতে পিছু চলা পথ।
যে পথে চল তুমি তোমার তুমি হয়ে,
সে পথের উল্ট দিকে চলি আমি পৃথক মতে।
আমার আমি নই তোমার, নেই তোমার দাবি,
কাজল কালো ভ্রমরে স্বপ্ন বলে না ফিরে পারি।
না পেলে না পেলাম চাই না তোকে আজ,
তুই হীনা আছে আমার বেজায় কারুকাজ।
বুক আমার নয় নকশী কাঁথা, বৃহৎ একটা শিলা,
বাহন ছাড়া কষ্ট নিয়ে থেমে থেমে চলা।
জানি তুমি কবিতা আমার, সে তো তোমার জানা,
আমি না সহ্য করবো হিংস্র তারি হানা।
ভয় নেই, বলেছি পূর্বে  মৃতপ্রায় আমি,
স্মৃতির এপিট-ওপিটে আমি উঠি-নামি।
উচু-নিচু তোমার মন প্রিয় কবিতার জননী,
ঘৃণা কবি তবু তোমায় প্রিয় মানষী মানি।
একদিন ছিলে তুমি মনে আমার একক রানী,
নিষ্টুর আমি নির্বোধ তাই কঠোর বলি বাণী। 
বলেছিলে একদিন তুমি, আমি ভীষণ নিষ্টুর,
তাতেই তুমি বর্ণনা দিয়ে গেলে মোর।
একবারো দেখলে না নষ্ট আমার মন,
দুই'শত টুকরোতে ভাঙ্গে সারাক্ষণ।
জোড়া লাগানো জোড় নেই, শরীর আজ মিছে,
চাই না আমায় ফেলে যা যাবার গেছে।
চলে যাও কবিতার জননী দিলাম মিথ্যে বিদায়,
বাসিন্দাশূন্য বাক্যে যদি পুনরায় আসতে চায়।
আসে চাইলে আসো প্রিয় নেই কোন মানা,
উড়ালপক্ষী হয়ে তুমি এসো মেলিয়ে ডানা।
জানি তুমি আসবে না ব্যর্থ মোর চেষ্টা,
ভুলে গেছো হয়ত বলা ছোট্ট শেষ কথাটা।
কথায় কথায় চোখের মনি ভিজলো নিরহ জলে,
কবিতা আমার দুই'শত মখোশ লাগিয়ে চলে।
গুম কবিতার পরিচয়, কে ছিল পিছে,
কবিতায় স্মৃতির দল গলে গলে পঁচে।
পঁচা গন্ধ ঠিক যেন নর্দমার নালা,
বুকের গৃহীন জ্বলসে গেছে জ্বালিয়েছে অগ্নি জ্বালা।
পুঁড়ে পুঁড়ে হয়েছে ছাই আমার অনবদ্য,
লিখেছি চুপিচুপি দুই'শ খানা পদ্য।
ছন্দে অন্ধ আমি দেখলাম যা অদেখা,
শুন্য কাগজে লিখেছি না বলা সব লেখা।
জানি আমার কবিতার জননী পড়েনা এই লেখা,
তারপরো গোপনে লিখি একা একা।
অনুভূতিগুলি পালিয়ে গেল কাগজের ফাঁকে ফাঁকে,
মানি না ভালবেসে বাসতাম ভালো যাকে।
ভাল নেই, সুস্থ নেই প্রেমহীন কবিতা
বিক্রয় করলাম অনিষ্টে মূল্যবান মম আত্মা।
নেই বাঁধন আমার আত্মা তোমার আত্মার সাথে,
জেগে থাকি ঘন ঘুমে নগ্ন চাঁদের রাতে।
যে চাঁদ আমার মত একেলা এককী,
তারও নাই বন্ধু কোনো মাছরাঙ্গা পাখি।
পাখির ঠোঁটে দুলে না ধর্মের গান,
স্রষ্টার সাথে করলাম নিষিদ্ধ অভিমান।
মান ভাঙ্গার ক্ষমতা আছে শুধু তোর,
সেই তুই নেই আমার, হয়েছিস খুব পর।
যা যা চলে যা,  যা আরো দূরে,
ঘৃণা করি লেখা কবিতায় দুই'শত বার করে।
জীবন আমার জীবন নয়, নয় কথার মূল্য,
আমি কি তোমার কাছে ঘাসের সমতূল্য।
ঘাস হয়ত সবুজ থাকে কিন্তু আজীবন নয়,
প্রেমের যদ্ধের যোদ্ধা আমি মানি না পরজয়।
জয় চাই বিজয়ী সেজে নিয়ে বিজয়ের পতাকা,
একবার এসে দেখো ফিরে  বুক আমার আস্ত ফাঁকা।
শুন্যতায় শুন্য বুকে বিরাজমান শুন্যতা,
নয় শুন্য আমার লেখা দুই'শত কবিতা। 
কাব্য-কবিতায় করেছি যাকে ভালবেসে হত্যা,
মানি না যাকে মানার যিনি একক সত্তা।
জাপ্সা লাগে এই ধরণীতে নীল রঙ্গে পর্দা,
স্বাধীন তুমি অন্যের হয়ে মেনেছো যাকে কর্তা।
মাঝে মধ্যে হয় ইচ্ছে ভ্রমণে যাই উপরে,
শান্ত মন হয় ক্লান্ত যখন শোধাই নিজেরে।
জানি আমার কবিতার জননী করেছিলে মানা,
বলবো আরো দুই'শতবার আঘাতে অজানা।
চেনা-জানা প্রিয় মুখ দেখি না অনেক দিন,
বাড়ুক সুদ তবুও অপূর্ন থাক ঋণ।
অপহাসে অব ঋণে বিবর্ণ কালো পদ্ম,
একবার তুমি করুণা করে পড় এই পদ্য। 

অনুরাগে তুমি প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ

খোকা আমার পাশে আয় 
তোকে একটা গল্প শোনাবো, চুপটি মেরে শোন,
এক ছিলেন মহাপুরুষ লেখক হুমায়ুন।
যার হাতে হিমুর জন্ম, 
সে আর কেউ নয়, মহা মানব অনন্য।
সে ছিল শিশিরের শব্দ, লেখনী অতুলনীয়, 
গগনের কিনারায় উদিত সূর্যের সম জনপ্রিয়।
তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নাম,
জন্মস্থান সবুজ-শ্যামল কুতুবপুর গ্রাম।
উনার হস্তে রচিত নন্দীত নরকে,
অদেখা ছিল যা, ধরা ছিয়েছে উনারি চোখে।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র আগুনের পরশমনি,
উপনাস্যের ভান্ডার তিনি, বিশাল এক খনি।
উনার নাটকে হয়েছে পাড় এইসব দিন রাত্রী,
দারুচিনি দ্বীপের পথে মোরা উনারি পথো যাত্রী।
আকাশ ভরা মেঘে করি জিজ্ঞেস, কে কথা কয়?
দরজার ওপাশ হতে উত্তর আসে উনারি পরিচয়।
উনি লিখেছেন একাধারে জোছনা ও জননীর গল্প,
গীতি-গানে পাই দর্শনলাভ অনুরাগী সংকল্প।
তারি মতন নেই দ্বিতীয় মানব, তিনি এক এবং একক,
অসাধারণীয় তিনি অতুলনীয় আমরন প্রিয় লেখক।
খোঁজি উনাকে অচিনপুরের দূরে কোথাও,
পাই না খোঁজে তোমাদের এই নগরে, উনি নেই আজও।
উনার সঙ্গী আজ রবিবারে সুদর্শনা রাশিয়ান পরী,
কোথাও কেউ নেই, তবুও সে আসে ধীরে ধীরে 
মাতাল হাওয়ায় তাকেই অংকন করি।