শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪

ঘুর্ণিপাক

ঘুরছে পৃথিবী, 
ঘুরছে আকাশ,
বাতাস, পাক-পাকালি,
ঘুরছে সবুজ, ঘুরছে বৃক্ষ, 
পশু পক্ষীর কলকাকলী।
ঘুরছে নদী, ডেউয়ের ধারা,
দিন শেষে সন্ধাতারা।
ঘুরছে মাটি, ঘুরছে মন, 
ঘুরছে নকল-নরম-শক্ত-খাঁটি,
ঘুরছে ঘুর্ণিঝড়ে ঘুর্ণিপাকে
যা কিছু যেথায় পরিপাটি।

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৪

জীবনের অংক

জীবনের অংক কিছুতেই মিলতে চাচ্ছে না,
জীবনের সমীকরণের ভগ্নাংশকে
কিছুতেই ভাঙ্গা যাচ্ছে না।
ফলাফল কিছুতেই পূর্ণ সংখ্যা হচ্ছে না,
বারবার দশমিক আসছে,
দশমিকের পর আসছে অনেকগুলো সংখ্যা,
পরিমাণে তাদের সংখ্যা অসীম।
আমি তাদেরকে গুণ করি, যোগ করি,
কিন্তু কিছুতেই ফলাফল গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না।
আমি ভাগ করি, বিয়োগ করি
কিন্তু ফলাফল বারংবার অগ্রহণযোগ্য।
আমি বর্গ করি অতঃপর জীবনকে
কিন্তু না, সঠিক ফলাফল যেন আসতেই চাচ্ছে না।
আমি উচ্চতর গণিতের সূত্র, জ্যামিতিক মন্ত্র
সবই প্রয়োগ করি একে একে।
কিন্তু না, ব্যর্থ আমার সকল চেষ্টা,
ব্যর্থ আমি, ব্যর্থ আমার জীবনের অংক।
আমি জীবনের লেনদেনকে
সর্বশেষে জাবেদা বহিতে সাজাই।
জীবনের সব প্রাপ্তিকে
ডেবিট কলামে সাজিয়ে,
জীবনের সকল বির্জনকে
সাজালাম ক্রেডিট কলামে।
কিন্তু না,
পুরনায় আমার জীবনের অংকে গড়মিল।
কিছুতেই জাবেদা বহিতে
দুই পার্শ্বের পরিমাণ সমান হতে চাচ্ছে না,
বরং জীবনে প্রাপ্তির তুলনায়
প্রদানের পরিমাণ বারংবার বেশি দেখাচ্ছে।

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

প্রেমের অভিশাপ

রাতের পর রাত জেগে থাকি,
রাত আমাকে জাগায়,
আমিও রাতকে জাগাই।

কিন্তু কেন,
আমার সাথে রাতের কি এমন অভিমান?

কেন রাত সমগ্র পৃথিবী হতে 
আমার সম্পর্ক ছিন্ন করে
একা করে দেয় আমাকে অন্ধকারে।

আমি তো কখনোই রাতকে পর ভাবিনি,
আমি বরাবর রাতকে ভেবেছি দিনের অঙ্গ।

ঠিক যেমনটা ভাবতাম 
তোমাকে আমার অঙ্গ,
ঠিক যেমনটা তুমি ছিলে মানুষ
আর আমি ছিলাম তার ছায়া।

কিন্তু কেন রাত আমাকে পর ভাবলো,
কেন রাতের বিষণ্ণতে 
স্বর্গ হতে বেড়াতে আসা ঘুম
বাসা বাঁধে না আমার চুক্ষুদ্বয়ে।

আমি উত্তর খোঁজি উপরোক্ত প্রশ্নাবলির,
আমার ভেতরের গৃহপালিত বস্তু
যাকে আমি অন্তর-আত্মা বলে ডাকি,
সেই গৃহপালিত বস্তু অট্টহাসিতে দেয় উত্তর।

বলে উত্তরে নিদ্রাহীনতার এই কারণ 
নয় সামন্য, নয় তুচ্ছ বিষয়, 
নয় জগৎ-সংসারে অদেখা,
নয় মিহি ভূমিকাময়।

আমি বিশদ বর্ণনা চাই, 
জটিল হতে জটিলতর ভাষা 
বোধগম্য নয় আমার।

গৃহপালিত অন্তর-আত্মা 
তখন হাহাকার করে রুক্ষ স্বরে,
মলিন কণ্ঠে বলে উপসংহারে
এ যে প্রেমের অভিশাপ।

সে অভিশাপে অভিশপ্ত তুমি,
রাত্রির চোখে শাস্তিস্বরূপ 
জাগতে হবে রাতের পর রাত,
জীবনের শেষ রাতেও তোমাকে 
জাগাবে বিষাদের কালো রাত।

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪

কর্মফল

তুমি চলে যেতে চেয়েছো 
আমি চলে যেতে দিয়েছি।

তুমি চলে যেতে বলেছো 
আমি চলে গিয়েছি।।

যা যা বলেছো তুমি 
সব-ই করেছি।

আজ বহুদিন পর
সময় এসেছে হিসেব কষাবার।

বল তুমি কি পেয়েছো, 
উত্তর দেবার সাহস আছে কি তোমার?

আছে কি তোমার কণ্ঠে জোর?
জানি মুখে তোমার নেই কোনো ভাষা
তোমার অভিধানে নেই কোনো শব্দ।

নিঃশব্দ তুমি,
নিরূত্তর তোমার চারিপাশ।

আজ তোমার পতনের দিন
তোমার মত আমারও পতন হয়েছিল
যখন তুমি ও তোমার শর্ত দুটোর সামনে 
আমি নত হয়েছিলাম পরাজিত যোদ্ধার মতন।

আমার ভালবাসার ধারালো তলোয়ার
তোমার চরণে বিলিয়ে দিয়ে
আত্মসমর্পণ করেছিলাম ঠিক তোমার মত
ঠিক এক পরাজিত যোদ্ধার মতন।

মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪

তোমাতেই প্রেম ৫


মনের দরজার প্রধান ফোটক
দিলাম আজকে খোলে,
আশা রাখি তুই একদিন
আসবি পথ ভুলে।

সেই ভুলের অপেক্ষায়
কত রাত্রি জাগি,
তুই না আসলে তবে
করবো রাগারাগি।

রাগতে আমার লাগে না ভালো
রাগে আমায় মানায় না,
কেমন করে তোর উপর
রাগবো আমি বল না।

তুই আমার প্রাণ পাখি
তোকে তাই খোঁজি,
তোরা আশায় দাঁড়িয়ে থাকি
মনের দরজায় রোজ-ই।

হাত ঘড়িতে সময় গুনি
একে একে যায় দিন,
রাত্রি আসে স্বপ্ন নিয়ে
তুই আসবি একদিন।

সেই দিনের অপেক্ষায়
আমি হলাম ক্লান্ত,
মনের দরজায় চৌরাস্তা
তোকে ছাড়া শান্ত।

তুই আসবি অবেলায়
অসময়ে কাছে,
ভালবাসা উপহার দেবো
মন সমুদ্র সেঁচে.

রাণী বানিয়ে রাখবো তোকে
করবো তোর আরাধনা,
তোর মন্দিরে দুহাত তুলে
লিখবো প্রেমের প্রার্থনা।

সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৪

আত্মা বিক্রয় ২

যেখানে আত্মার মহামিলন
সেখানে আমার আত্মা দাঁড়িয়ে থাকে নিরব।

আমার আত্মা কোনো সাধারণ আত্মা হয় নয়
অথবা সাধারণ ও অসাধারণের মধ্যে
আমার আত্মা অতি নগন্যতম।

আমার আত্মা আমার নয় পুরোপুরি,
আমার আত্মা একটি বিক্রীত আত্মা।

খরিদ্দার যিনি তিনি স্রষ্টার বিপরীত,
আমার আত্মা দ্বারা কৃত কর্ম
তাও স্রষ্টার বিপরীত,
অন্যান্য আত্মার বিপরীত।

অন্যান্য আত্মারা নিজের প্রবিত্রতা রক্ষায় ব্যস্ত
তাদের সর্বোচ্ছ চেষ্টা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে।

আর আমার আত্মা আমার নিয়ন্ত্রণহীন,
গৃহপালিত বস্তু তার কাছে যিনি স্রষ্টার বিপরীত।

তিনি আত্মা নিয়ন্ত্রণে আমার অংশ গ্রহণের ক্ষমতা
কেড়ে নিয়েছেন আত্মা বিক্রির চুক্তিপত্রে
আমার নিজ সাক্ষর প্রদানের মাধ্যমে।

তাই বিশুদ্ধ আত্মাদের সাথে
আত্মার মহামিলনের মহাউৎসবে
আমার আত্মার প্রবেশাধিকার নেই,
আমার আত্মা দাঁড়িয়ে থাকে নিরব।

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৪

আটারোতে প্রথম প্রেম

আটারো বয়স বয়সে 
পড়েছিলাম প্রথম প্রেমে,
সেই প্রেমের অনলে 
জীবন গিয়েছে ঘেমে।
সুমধুর প্রেমের স্বাদে 
অশ্রু ঝরেছে অবিশ্রান্ত,
কেঁদে কেঁদে হইনি কখনো 
কষ্টে পরিশ্রান্ত।

জেগে জেগে রাত কেঁটেছি,
ব্যর্থ প্রেমে দূঃখ পেয়েছি, 
হারিয়েছি যা ছিল,
আটারো বছর বয়সে প্রথম প্রেম 
আঘাত দিয়ে গেলো।

অদ্য আমি পদ্য লিখি 
কান্না নিয়ে চোখে,
উন্মাদ পরিচয়ে আমায় পরিচয়
দিয়েছে ভদ্রলোকে।

লোক বলে আটরোতে 
তুমি করেছো প্রথম ভুল,
সারা জীবন কেঁদে কান্নায় 
দিতে হবে তার মাশুল।

আমি বলি ভুল হয়নি 
আটারো বছর বয়সে,
গর্ব করি অহংকারে 
প্রথমবার ভালবেসে।

ভালবাসি লুকিয়ে আমি
মুছকি হাসিতে হাসি,
কান্না আসা কন্ঠে বলি 
তাকেই ভালবাসি।
দূঃখ নেই তার চলে যাওয়াতে
নেই মনে অভিমান,
ভালবাসতে আমিও পারি 
আটারোতে হয়েছে প্রমাণ।

নারী ও প্রজাপতি

প্রজাপতি যেমন এক ফুল হতে
উড়ে বেড়ায় অন্য ফুলে,
নারী তুমি ঠিক তেমনি
হেঁটে বেড়াও হৃদয় কুলে।

এক হৃদয় হতে অন্য হৃদয়ে
তোমার আনাগোনা,
প্রেমিক পুরুষ দলের বুকে
স্বপ্ন হাজার বুনা।

মধু তুমি ভালবাসো
ভালবাসো সেরা ফুল,
সকল ফুলের মধ্যখানে
প্রেমিক পুরুষ করে ভুল।

ভালবেসে নিজের মাঝে
রাখে তোমায় যতনে,
কিন্তু তুমি ডানা মেলিয়ে
পাড়ি জমাও অন্য মনে।

প্রেমিক পুরুষের দল তখন
অশ্রু ঝরায় বৃষ্টিতে,
প্রজাপতি নারী তোমাকে
স্মরণ করে কষ্টতে।

মন

মন মানে না বন্দী জীবন বন্দী খাঁচায়,
উড়ালপক্ষী মন উড়াল দেয় নুতন আশায়।
গমন করে অন্য গ্রহে প্রেমের লিপ্সা সঙ্গে করে,
অণু সুখে মানে না মন, চায় আরও লোভের ভরে।
পায় যত চায় অধিক, দেয় না কিছু তবে,
মনের মতন মনের সন্ধানে কর্মব্যস্ত রয় সবে।
এমন মন চায় সবাই যে মন বুঝে কষ্ট,
না বলা কষ্ট যত গহীনে পথভ্রষ্ট।
কিন্তু পায় কজনে এমন মনের সন্ধা‌ন,
পেলেও দু'দিন পর নিজ মনে শান্তি অবসান।
হবে না কেন যখন মনের মত মন হয়ে যায় নিলীন,
তখন একটাই কথা জীবন বলে
মনের মত মন পাওয়া যায় না কোনদিন।

বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৪

ডায়েরি

আমার কিছু কথা,
কিছু গবেষণা,
চিন্তা-চেতনা, ভাবনা,
লিখে রাখলাম ডায়েরির পাতায়।
এক সময় আমি মরে যাবো
শুধু বেঁচে রবে স্মৃতি ডায়েরির পাতায়।

বেঁচে রবে অনুভূতি,
অদ্ভূত বিবৃত্তি,
অন্য রকম সত্তা,
বেঁচে রবে মৃত্য লাশ
ভালবেসে যাকে করেছি হত্যা।

দৌড়াবে উক্তিগুলো,
নাচবে, খেলবে, চলবে।
চলবে না অলস কলম
শুধু ডায়েরী কথা বলবে।

প্রিয়জন যত আপন
যত আছে নগরে,
দেশ-দেশান্তর এক হয়ে যাবে
আমার পরাজয় মেনে নেয়ার হারে।

পরাজয় আমি ঠিক-ই মানবো
মানবেনা আমার ডায়েরী,
লুকিয়ে থাক লেখা যত কথা
হারিয়ে যাক মনের শায়েরী।