চোখের জলে তোমায় বরণ করেছিলাম
এসেছিলে তুমি সেই জলে ভেসে
মুখে তোমার নকল হাসি
বুকে নিয়ে বিষাক্ত সাপ,
তার ছোবলে মৃতপ্রায় তুমি
চোখেতে রেখে কষ্টের ছাপ।
দীর্ঘ ছিল তোমার প্রহর
জীবন এখন মেহমান,
চলে যাবে তুমি আচমকা
সল্প তোমার অস্থায়ী প্রাণ।
সময়ের কাঁটা যাচ্ছে গোনে
আসবে কখন তোমার শেষ
উঠবে বেজে বিদায়ের ঘন্টা,
হারিয়ে তুমি পালিয়ে যাবে
ভাসিয়ে লাগামহীন মনটা।
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩
বিদায় ২০১৩
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩
আমার পথে আমি: ২
পথ চলা অবিরাম
ধ্বংস্তূপের মত রাস্তা,
এই পথে পথিক আমি
চলছি একা বুকে নিয়ে আস্তা।
পথ একেক সময় একেক আকৃতির
কখনো মোটা, কখনো সুরু
মাঝে মধ্যে উঁচু-নিচু,
পথের অল্প অংশ বিশেষ
ভাঙ্গা রয়েছে কিছু।
পথের চারিপাশে সৌন্দর্য অনেক
যা দেখে জুড়ায় চোখ আমার
কিন্তু আমি হলাম পথিক, যাযাবরের মতন
গন্তব্য আমার অস্থায়ী।
যেখানে হয় সন্ধ্যা, সেখানে কাটে রাত
একসময় আসে সকাল, তারপর দুপুর,
অবশেষে বিকাল।
পথ কিন্তু হয়না শেষ,
দীর্ঘ এই পথে আমি চলছি
সেজে পথিক ছদ্মবেশ।
শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৩
ছবি আঁকা
নিয়ে বসলাম আমার ড্রইং খাতা
রং, তুলি, ব্রাশ, জল রঙ্গের টিউব
লাল, নীল, বেগুনি, সবুজ, হলুদ
নানা রঙ্গের সমাহার।
কী আঁকাবো তাই নিয়ে ভাবনা,
কী দিয়ে করবো শুরু
কী আঁকাবো ড্রইং খাতায়,
ফুল আঁকাবো, নাকী ঘাস,
নাকী আঁকাবো নদীর পাঁড়ে
ক্ষুদে কয়েকটি হাঁস।
হাঁসের সাথে থাকবে ছানা,
কচি তাদের বাড়ন্ত ডানা।
পাশে থাকবে ফুলের বাগান
বাগানে আমার প্রিয় ফুল গোলাপ।
তার পাশে থাকবে খোলা মাঠ
মাঠের সামনে বিরাট দীঘি,
সূর্যের তখন অস্ত যাবে,
ব্যস্ত শহর শান্ত হবে,
সন্ধ্যা তখন আকাশ ছুঁবে,
ঘরের বালক ঘরে যাবে।
ঘরে গিয়ে সে ছবি আঁকাবে
আঁকাবে রঙ্গিন রঙ্গের ছবি,
অথবা, সে হবে কলম হাতে
ছন্ধছাড়া কবি।
স্বপ্নকন্যা আর আমি ৯
আর কতকাল থাকবো আমি
সংগী ছাড়া একা,
স্বপ্নকন্যা আসবে কাছে
কখন দিবে দেখা.
জানিনা কোথায় রয়েছে সে
আমার জন্য রাখা.
স্বপ্নদেশের প্রান্তজুড়ে
ছবি তারই আঁকা,
একা একা যায় না আমার
সয়ম এখন আর,
কোথায় গেলে পাবো দেখা
প্রিয় স্বপ্নকন্যার.
Time 1:27am
আবেগ অথবা অন্য কিছু
গতকাল রাতে ঝরে পড়লো দু'ফোঁটা চোখের জল,
অনেক্ষন ধরে ঝরছিল বিরতিহীনভাবে,
আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম নিজের দুই চোখ
লাল বর্ণ ধারণ করেছিল চোখের কুসুম সাদা অংশ।
মনেতে ছিল হতাশার জলোচ্ছ্বাস,
মান-অভিমান একসঙ্গে মিশে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
নিষ্ঠুর আমার পাথর এক বুক,
অশ্রুজলে ডুবন্ত দু'চোখ।
এইবার প্রথম বার নয়,
এর আগেও অনেকবার ঝরেছে জল।
কান্নাকে থামাই বল প্রয়োগ করে
একাকী রাতে চোখের মনিকে দেই সান্তনা,
মৃদু হাসিদেই আয়নায় দাঁড়িয়ে,
আয়নায় প্রতিফলিত হওয়া লাল চোখে চোখ রেখে,
হারানোর যন্ত্রনা পাথর বুকেতে মেখে।
একটু থাকাই পিছনের পাতায়,
কতই না সুখী ছিলাম
একা ছিলাম, ভাল ছিলাম,
এলে তুমি জীবনে সৃষ্টিকর্তার ইশারায়
চলে গেলে সেই তুমি উনারি ইশারায়।
আমি হলাম আবার একা,
হারালাম নিজের সুখ, হারিয়ে তোমার দেখা।
এখন আমি ও আমার কল্পনা,
কল্পনাতে আজো সাজাই স্বপ্ন তোমার,
ভাবি আনমনে, নিঃশব্দে অশ্রু নয়নে।
তোমার পূর্বে একা ছিলাম, তোমার পরও আমি একা,
সোজা পথ সোজা ছিল, পথ হারিয়ে এখন বাঁকা।
বিরাট এক পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় মনের আকাশে,
হারিয়ে হারানোর বেদনা হৃদয়ের বাতাসে।
জানি না, আর কতকাল ঝরবে অশ্রু চোখ হতে,
কতকাল মুছবো পড়ন্ত অশ্রু পাপী দু'হাতে।
যে হাত দিয়ে হয়েছিল সূচনা প্রেমের,
সে হাতে কবিতা লিখি, তাপে গলীত মোমের।
প্রিয়তমা, এই তাপ আগুনের নয়,
এই তাপ তোমার, তোমার তাপে গলীত আমি।
তোমার তাপে গলীত হয়ে পানি বয়ে আমার দু'নয়নে ।
ছায়া মানব
আলো আধাঁরের ছায়া পথে একা সেই মানুষ
সে সর্বদা নিঃস্ব ও হতাশাগ্রস্থ,
বিপদের মায়ারেখা তার চারিদিকে
সে জানেনা তার লক্ষ্য,
জানেনা কোথায় তার গন্তব্যস্থল,
পিপাসায় কাতর সে
না জানে কোথায় পাবে জল।
সে গতিশূন্য, সে চিন্তাশূন্য
সে ভাবনাহীন, সে কল্পনাহীন
সে দেখেনা কোন স্বপ্ন,
পেটের ক্ষুধায় ভোগ করেনা
কোন দেশের অন্ন।
মানুষটি যেথায় যায়
তার প্রতিচ্ছবি সেথায় যায়।
ডানে-বামে, উপর-নিচে,
যায় সে মানুষটির পিছে পিছে।
সে আলাদা হয়না মানুষটির শরীর হতে
শরীরের সাথে যেন সে আটকানো।
নানা রঙ্গের এই ভুবনে নিগ্রদের মতন রং তার কালো।
তার রয়েছে একটি নাম, নাম তার ছায়া,
মানুষটির জন্যে প্রতিক্ষণে জাগ্রত তার মায়া।
কিন্তু হায়! সে যায় হারিয়ে
যখন অন্ধকারের কালোতে প্রবেশ করে সে,
খুঁজে পায়না কেউ তখন তাকে
হারিয়ে পিছু চেয়ে।
(আমার আঁকা ছবি)
সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩
রাতের বন্ধু
রাতের সাথে কথা আমার
রাতের সাথে কাজ,
জেগে আছি রাত্রি হয়ে
সাড়াটি প্রহর আজ.
রাতের ক্ষণে আনমনা আমি
ভাবনাহীন ভাবানায়,
অলশ আমার যাচ্ছে প্রহর
রাত্রিময় কামনায়.
চোখের ফোটক থাকবে খোলা
রাতের বন্ধুকে নিমন্ত্রন,
সে আসলে গভীর ক্ষণে
জানাবো তাই আমন্ত্রন.
সে আসবে ঘুম হয়ে
দুই চোখেরি পাতায়,
রাতের সাথে হবেনা জাগা
ঘুমন্ত সুখের আশায়.
সাগরের ওপাড়
শুনেছি সাগরের ওপাড়ে সুখের নেই অভাব,
সেখানে নাকি স্বার্থহীন প্রতিটি মানুষের স্বভাব।
সেখানে নাকি সবাই সমান,
লুকোচুরি খেলে মান-অভিমান।
সেখানে নাকি গাছে ফুল ধরেনা
শুনেছি ফুলের বদলে ফোঁটে ভালবাসা,
ভেদাভেদ ভূলে সবার মুখে ক্রোধহীন মিষ্টি ভাষা।
সেখানে নাকি দিনের শেষে আবার আসে দিন,
প্রতিটি পথে রূপের বাহার, অচেনা ও অচিন।
শুনেছি সেখানে নাকি বাঘে-হরিণে পানি খায় একসাথে,
ভাঙ্গেনা কখনো হৃদয় কারো সেখানে অসহায় রাতে।
শুনেছি সেখানে নাকি ডাঙ্গায় বেড়াতে আসে জলেতে থাকা মাছ,
বিকেল শেষে সন্ধ্যা নামে, গোধূলী লগন সাঁঝ।
সেখানে নাকি সাগর সৈকতে চিকচিক করে প্রতিটি বালিকণা,
শুনেছি স্রোতের জলে মুছে যায় সেখানে সুপ্ত আরাধনা।
বাংলা সিনেমা
একটা সিনেমার গল্প লিখতে বসেছি রাতে,
সিনেমার নায়ক গিয়েছে বেড়াতে।
বেড়াতে গিয়ে সে পেল নায়িকার দেখা,
নায়িকা ছিল ফুল বাগানে একাকী বসে একা।
এক সময় নায়িকার চোখে চোখ পড়লো নায়কের চোখ,
এইভাবে হল তাদের প্রেম নামক অসুখ।
কিন্তু নায়িকার বাবার ছিল প্রচুর টাকা,
আর নায়ক হল পথের ভিখারি, পকেটে তার ফাঁকা।
নায়িকার বাবা তাই মেনে নিলেননা তাদের প্রেম,
তিনি বললে নায়ককে,
"এই দেখো আমার বিশাল বাড়ি
চারটে দামি কার,
তোমার নেই কিছু ছেলে
তুমি হলে বেকার।"
নায়ক তখন উঠলো ক্ষেপে, সে বলল,
"চৌধুরী সাহেব, আমি হতে পারি গরীব
তাই বলে নই ছোটলোক,
আমার আছে বিশাল বড়
একখানা বুক।
এই বলে সে বেড়িয়ে পড়লো রাজপথে,
কঠোর পরিশ্রম করলো সে দিন এবং রাতে।
দিন মজুরি করলো, টেলা টানলো, চালালো বিক্সা গাড়ি,
অনেক টাকা জমিয়ে সে কিনলো একটা বাড়ি।
তারপর সে ছুটে গেল নায়িকার বাবার কাছে,
গিয়ে বললো "চৌধুরী সাহেব, এখন আমার সব আছে।"
কিন্তু হটাৎ তখন ঘটলো ভিলেনের এন্ট্রি,
সঙ্গে তার অন্ত্র হাতে গুন্ডা কয়েকটি।
শুরু হল ভিলেনের সাথে নায়কের মারামারি,
নায়িকা নিয়ে তাদের মধ্যে কাড়াকাড়ি।
অবশেষে ধীরে-সুস্তে আসলো পুলিশ বাহিনী,
বাংলা সিনেমায় দেরিতে আসা প্রধান তাদের নীতি।
"Hands Up" আইন তুলে নেবেন না নিজের হাতে,
অন্যথায় রাত পোয়াতে হবে জেল-হাজোতে।
অতঃপর পুলিন ধরে নিয়ে গেল গুন্ডাদের,
সুবুদ্ধি উদয় হল চৌধুরী সাহেবের।
শেষ-মেষ হাসিমুখে দিলেন তিনি
নায়কের হাতে নায়িকার হাত
এবং সিনেমা সমাপ্ত,
বাংলা সিনেমায় এই একই কাহিনী
যুগ যুগ ধরে চলিত।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যসমূহ (Atom)

