শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০১৪

রজনী

যদি রজনী শেষে সকাল না আসিত
গভীর ঘুমে রইতাম সারাটি ক্ষন,
স্বপন দেখিতাম বন্ধ চোখে
মুক্ত মনে নিজ বাতায়ন।

আসিত সে তার-ই ধারে স্বপনে
আসিতাম আমিও সাথে,
গভীর ঘুমে হইত আলাপ
অহরহ কালো রাতে।

ভাল-মন্দ হইত জানা
জানিতাম লুকানো হৃদয়,
যদি না আসিত সকাল
হত না যদি রজনীর ক্ষয়।

রজনী আমায় দেয় শিক্ষা
শিক্ষায় নতুন বেগ,
ভালবাসি আমিও যারে
সেও রজনীতে আসা মেঘ।

বৃষ্টি হয় মেঘ হইতে
চোখের চারিধারে,
কাঁদিতে চাই বেশি আরো অনেক
রজনীর অন্ধকারে।

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৪

দ্বিতীয় মন

আকাশ কাঁদলো বাতাস কাঁদলো 
কাঁদলো আমার চোখ,
কাঁদেনি শুধু বেড়াতে আসা 
মনের আগন্তুক।

উষ্ক মন ভিজলো জলে 
কাঁদলো মনের মন,
মনেরও একটা মন থাকে 
থাকে তারও দু'নয়ন।

সেই মন কাঁদে গভীর শোকে 
আসে যখন স্রোত,
স্রোতের গহীনে বসতি যার 
সে যে অচিন দূর্ত।

দূর্তের বিহনে কাঁদে প্রাণ 
কাঁদে সবুজ বন,
মনের ভেতর মন কাঁদে 
কাঁদে সারাক্ষণ।

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৪

অনুভূতি-৮


পুরনো কিছু কথা আজো অদৃশ্যমান হাতের ন্যায় কাজ করে
অহরহ বিচরণ করে মনের অশ্রেণীবদ্ধতায়,
সূচনা করে নতুন মানবের অথবা পতন ঘটায়।

আমি আমার শুষ্কতা নিয়ে নতুনত্বের সন্ধান করি
পচনশীল আয়ুকে আরেকটু পচানোর নিমিত্তে।

পচে গলে যাওয়া অংশটুকুকে ধুয়ে মুছে
পরিষ্কার করে দেয় কার্যকরি কিন্তু অকেজো কথাগুলো।

আমি সোনার হরিণের স্বপ্ন দেখি না বাস্তবে
আমি দেখি কথার ভিড়ে কথাগুলোকে হারানোর স্বপ্ন
পোষণ করি অন্য জীবনের প্রেক্ষাপট।

ঘোড়ায় পায়ের ধ্বনির মতন আমি 
জীবনের ঘড়ির কাঁটার শব্দ শুনি,
বিস্তারিত শুনি না, 
শুনি অল্প।

অল্পতেই এলোমেলো কথায় ডাস্টবিনে 
খোঁজে পাই নিজেকে,
অদৃশ্যমান হাত আমাকে 
পচে গলে নষ্ট হতে দেয় না।

শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৪

মৃত্যূর আর্জি

ইশ্বর তুমি কোথায়, কোন পৃথিবীর কোন প্রান্তে,
কি আছে আমার মনে তুমি কি তা জানতে।
জানতে যদি তবু কেন খালি হাতে ফিরলো আমার দোয়া,
অপূর্ণ রাখলে কেন সুখের আলোক ছোঁয়া।
আশরাফুল মাখলুকাত আমি সকল সৃষ্টির সেরা,
জানতে চাই ইশ্বরের কাছে করি তাকে জেরা।
বল ইশ্বর অনিশ্চিত কেন ভাগ্যের লিখন,
কি আছে ভাগ্যে লিখা জন্ম-মৃত্যূর পণ।
জন্ম হল মানুষরূপী হিংস্র এক জীবে,
ধ্বংস করি মনুষ্যত্ব ক্ষুদ্র সুখের লোভে।
মৃত্যূ হবে একদিন, মুক্ত মৃত্যূর হাত,
মৃত্যূর ভয়ে নই ভীতু আমি মানব জাত।
আসুক মৃত্যূ, আসুক দেহে, দিলাম নিমন্ত্রণ,
ইশ্বর তুমি আমার দোয়া কেনো কর না গ্রহণ।


বিচার

স্বপ্ন আমায় দেখিয়েছিলে
সাত আসমানের বিদাতা,
একবার তুমি মর্ম বুঝো
কি নিয়ে আমার কবিতা।

একবার তুমি চেষ্টা কর
বুঝতে মনের হাহাকার,
চাইনি কিছু তেমন দামি
শুধুই চেয়েছি উপহার।

উপহার নয় তেমন কিছু
চেয়েছি শুধু তাকে,
ভালবেসে ভালবাসতাম
অন্ধ হয়ে যাকে।

তুমি বুঝলে না প্রেম আমার
বুঝলো না প্রিয় মানুষটি,
শত্রু এখন ভাবি তোমাদের
চূর্ণ করেছো হৃদয়টি।

সাত আসমানের বিদাতা
বিচার আমি চাই,
তুমিও দোষ করেছো
তোমারো ক্ষমা নাই।

শাস্তি পাবে তুমিও
সাথে পাবে সে,
যার জন্য আজো প্রেম
রাখি একাংশে।

তার দোষ আমার রেখে
চলে গেল সে একা,
তোমার দোষ বিধাতা তুমি
কেন দিয়েছো তার দেখা।

কেন তুমি বুকেতে প্রেম
দিয়েছো একবার জ্বালিয়ে,
অর্ধেক জ্বলনের পর কেন
দিয়েছো প্রেম নিভিয়ে।

তাকে না হয় করবো ক্ষমা
ভালবাসি তাই,
তোমায় বিদাতা ভাসি না ভালো
ক্ষমা তোমার নাই।

মৃত্যুর পর একবার যদি
তোমার দেখা পাই,
বলবো বিদাতা তোমার কাছে
তোমার বিচার চাই।

বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৪

তোমার মনের মৃত অনুভূতি

আমার জ্ঞান খুব অল্প
এই অল্প জ্ঞানের আলোকে 
আমি বলতে পারি নিশ্চিতরূপে
তোমার মন জুড়ে এত হাহাকার কেন?

জানি, তোমার মন মরুভূমির প্রতিরূপ,
সেখানে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে
কালো রঙ্গের অচেতন অনুভূতির দল,
যা বাস্তবতার নিরিখে মৃত বলে পরিচিত।

আমি তোমার সেই মনের পরিবেশ সম্বন্ধে 
সম্যক ধারণা লাভের আশায়
এসে দাঁড়িয়েছি বালিময় মরুভূতিতে।

সেখানে কী একটা আমায় আকর্ষণ করে,
যেন সেটা অনভিজ্ঞ এক পক্ষ, শক্তি অথবা সত্তা।

আমার খুব অল্প জ্ঞান,
এই কিঞ্চিৎ পরিমাণ জ্ঞানে আমি বলতে পারি
কীসে আমায় করে এত আকর্ষণ ।

আমি সেই আকর্ষণের কারণকে 
তোমার মৃত অনুভূতিতে সংজ্ঞায়িত করি।

জানি, তোমার মনের পারিপাশ্বিক অবস্থার সমষ্টি 
এখন অদৃশ্যমান ফলাফল,
আমি সেই অদৃশ্যমান ফলাফলকে 
পরিমাপ করার প্রয়োজনে
অধ্যয়ন করি মৃত অনুভূতির ভেতর 
চক্রাকারে ঘূর্ণায়মান সব লিখিত দলিল।

সেখানে সেসব দলিলে কী লিখা আছে 
তা এক কথায় কারো বলার সাধ্য নাই, 
আমারো নাই। 

আমার জ্ঞান খুব অল্প,
আমি আমার অল্প জ্ঞানে সব কিছু বলতে পারি
কিন্তু সীমাবদ্ধ অল্প জ্ঞানে 
তোমার মনের তাৎপর্য আমি বর্ণনা করতে পারি না।

শনিবার, ২ আগস্ট, ২০১৪

অলীক সম্পর্ক

শয়নে-স্বপনে তার সাথে যোগাযোগ
প্রত্যাশিত প্রেমের নতুন দ্বার উন্মোচনের চেষ্টায়,
আমি প্রয়োগ করি ভিন্ন রঙ্গের পন্থা
তার মনের সম্রাজ্য দখলের কামনায়।

আকস্মিকভাবে সেও সাড়া দেয়,
সম্ভাব্য প্রেমের দীপক জ্বলে উঠে তখন,
এ যেন স্রষ্টার চিরসত্য বিধান।

যতবার সাক্ষাৎ হয় তার সাথে
ততবারি দীপকের আলো বৃদ্ধি পায় ব্যাপক,
প্রসারিত হয় তার প্রতি সুনির্ধারিত স্বর্গের চৌরাস্তা।

সেখানে সে কখনো কখনো 
বার্তা পাঠায় তার আসতে দেরি হবে।
কিন্তু আমি ক্ষান্ত হই না,
আমি প্রেম নিয়ে সর্বাংশে প্রস্তুত থাকি
তার সামনে উপস্থাপনের আশায়।

প্রেমের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রেখে 
বিস্ময় জাগাতে চাই তার সর্বাগ্রে,
সেই লক্ষ্যে আমি আমার প্রেমের নীল নকশা প্রণয়নে
চলে যাই তারি শয়নে-স্বপনে।

প্রত্যক্ষভাবে না হোক প্ররোক্ষভাবে 
তার স্বপনের সাথে আমার স্বপনের সেতুবন্ধন স্থাপিত হয়,
জীবনের রেলস্টেশনে দুইজন দুজনার জীবনকে
এক জীবন বানানোর যৌথ প্রচেষ্টায়
সেখানে দুজন জড়িয়ে থাকি ওতপ্রোতভাবে।