বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

লাশ

একদিন তর-তাজা এই শরীর
পরিণত হবে লাশে,
পচনের গন্ধ উড়ে বেড়াবে
প্রতিটি নিশ্বাসে।
সেইদিন পাশে কেউ বসবে না
রাখবে না হাতে হাত,
সেইদিন কেউ দিবে না শান্তনা
সারাতে গাঢ় আঘাত।
তখন কেউ ডাকবে না তোমায়
সুন্দরতম নামে,
গভীর ঘুমে ঘুমন্ত তুমি
চিরতম বিশ্রামে।
পরিচয় বলে থাকবে না কিছু
পরিচয় হবে লাশ,
স্থির হয়ে রবে শরীর
জীবনের হলে নাশ।
দার-দেনা, চাওয়া-পাওয়া
সবকিছুতে আসবে ইতি,
লাশ হয়ে থাকবে শুয়ে
পৃথিবীর বুকে তুমি হবে স্মৃতি।
ভাই কাঁদবে, বোন কাঁদবে
কাঁদবে প্রিয় মানুষ,
মরা দেহ অচল হবে
হারিয়ে তার হুশ।
আত্মা ও শরীর ছিন্ন হবে
ভিন্ন দুই জিনিশ,
কেউ তখন নেবে না তোমার খবর
তুমি শুধু বলবে মাঝেমধ্যে
কবরে এসে খবর নিশ।

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কবি ও কবিতা

কবি নই আমি,
তবুও কবিতা লিখতে বসেছি,
কিছু কথা কবিতায় সাজিয়েছি।

সাজসজ্জা নিয়ে  কতই ছন্দের খেলা,
মনের উঠানে বসেছে কথার মেলা।

কিছু খেলা, কিছু মেলা,
এই নিয়ে কাঁটে বেলা।

ফের চাই পিছু,
কান পেতে থাকি
যদি বল কথা কিছু।

কিন্তু সে বাক্যহারা
বোবা সে বাক্য হারিয়ে,
নীল আকাশে মেঘ তাড়িয়ে।

শুরুতে অথবা শেষে,
মেঘ গেল ভেসে।
মেঘের সাথে আমিও ভেসেছি,
কবি নই তবুও কবিতা লিখেছি।

কবিতার ছন্দে, কবিতার বন্ধনে
আমিও এক ধরনের কবি
কবিতা লিখি মনের সুখে,
শুনবো বলে কিছু কথা
প্রিয় কারো মুখে।

কে সে, কে-ই বা সে?
যার জন্য এই কবিতা
সে কী জানে আমি কবিতা লিখি,
মুক্ত হস্তে আমি স্বাধীন কবিতার পাখি।

আমার আকাশ, আমার বাতাস,
নিরাশায় আমি হতাশ।
কেউ বলেনা কথা আমার কবিতা নিয়ে,
সবাই ব্যস্ত আমার মন্দ চেয়ে।

জানি আমি খারাপ
ভাল কেউ নই,
আমি জানি না শুধু অভিনয়,
কী করে ভাল সাজতে হয়।

আমি শুধু জানি লিখতে কবিতা
কবিতা নিয়ে পূর্ণ এই আমি,
যদিও তা মূল্যহীন কিছু কথা।
কিন্তু আমি কবি, আমি জানি,
কবিতার মূল্য হবে কত খানি।

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

অনুভূতি ৪


আমি সেই দিন দেখেছি মায়াভরা রাতে
এসেছিলে তুমি কালো অন্ধকারে।
দেখেছি তখন একা নও তুমি,
তোমার সাথে অন্য এক যুবক।
তার হাতে ছিল তোমার হাত
দেখে মনে হচ্ছিল তোমরা প্রেমিক যুগল,
আর আমি ছিলাম খানিকটা কিছু দূরে
নিরব ছিলাম, শান্ত ছিলাম।
আমার ভানবাগুলো প্রশ্নতে রূপান্তর,
কেন তুমি অন্যের বুকে হলে দেশান্তর।
আমি কি অপরাধী ছিলাম, না আমি তো তা নই,
কিন্তু কেন আমার এই বুকে প্রেম নামে তোমার পরিচয়?
এখনো বুকের গহীনে কোন এক অঞ্চলে তোমার নামে আগুন জ্বলে
সেই খানেতে তোমার আগুন কে বল নিভাবে?
চোখের তলায় আগুনের তাপে পড়েছে কালো চাপ
কেউ বুঝে না আমার এই বুক তোমার নামে করে হাহাকার,
তোমার দু'চরনে আমার অশ্রু জানি নিষ্কৃট উপহার।
তবে এই উপহার অনেক রাতের জমানো অশ্রু দিয়ে কেনা,
সেই সব রাতে আমি ছিলাম ঘুমহীন হিমালয়ের সাদা তুষারকণা।
এখনো আমি রাত জাগা পাখি, ব্যবধান শুধু একটাই, 
আগে তুমি ছিলে তাই জাগতাম রাত
আর এখন তুমি নেই তাই নিদ্রাহীনতায় জাগে প্রতিটি আমার রাত।

তিনটি দ্বীপ

এক দ্বীপে আমি থাকি, অন্য দ্বীপে তুমি,
মধ্যখানে আরেক দ্বীপে স্বর্গ বাস ভূমি।
তিন দ্বীপে চলাচল নীল ঢেউয়ের খেলা,
মাঝ দ্বীপে কেউ থাকেনা, শুধুই অবহেলা।
তোমার দ্বীপে তুমি একা, আমার দ্বীপে আমি একা,
মাঝ দ্বীপে স্বর্গ বাস ভূমি নিঃশব্দে মাখা।
দূরত্ব হতে আরো দূরত্ব দুই দ্বীপের মাঝে,
নীল ঢেউয়ে স্বপ্ন আমাদের তৃতীয় দ্বীপে সাজে।
তৃতীয় দ্বীপ স্বর্গ বাস ভূমি, স্বপ্ন দেয় হাতছানি,
কী করে বল সেখানে আমাদের বাস্তবতাকে আনি।
অনেক কঠিন, ভাল লাগেনা, তুই থাক তোর দ্বীপে,
আমি থাকবো আমার দ্বীপে নিত্য-নতুন চাপে।
মাঝ দ্বীপে থাবকে স্বপ্ন, একা হয়ে ভীষণ,
শুনবে সে নীল সাগরে নীল ঢেউয়ের ভাষণ।


আত্মা বিক্রয়

অশুভ এক শক্তির কাছে করেছি মাথা নত,
যে আমাকে দিবে ক্ষমতা অপরিসীম অবিরত।
তার নিকটে করবো বিক্রয় আমার পবিত্র আত্মা,
সেই দাবিতে অভাবনীয় সংলাপ এবং বার্তা।
কথোপকথনের মধ্যখানে উপস্থাপিত আমার কিছু চাওয়া,
মস্তিষ্কে ধ্বনিত তিনবার ঘন্টার কিছু ছোঁয়া।
শরীর ভারি হল, নিশ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম,
সফল হল আত্মা বিক্রি, যায়নি বৃথা পাপিষ্ঠের শ্রম।
এখন শুধু চুক্তিপত্রে করতে হবে সাক্ষর,
রক্ত দিয়ে লিখতে হবে নামের প্রতিটি অক্ষর।

সুন্দরী লালনা

(আমার লেখা কবিতা এবং আমার আঁকা ছবি)

"সুন্দরী লালনা"

সেই দিন শস্য-শ্যামল সবুজ মাঠে
দেখেছি সুন্দরী এক লালনা,
তার রূপ আগুনঝরা
প্রসূত মনেতে বাসনা।
পুষ্প সদূশ ছিল বিকশিত
উরন্ত তার কেশ,
শাড়ির ফাঁকে দিয়েছিল দেখা
অদম্য নাভিদেশ।
শ্রী ঢাকতে অক্ষম
হাল্কা শাড়ীর আঁচল,
মন-মন্দিরে হল পতীত
উষ্ণ প্রেমো জল।
দেখেছি তখন রূপ আমি তার
পূর্ণকরে নয়ন,
লজ্জাবতী পদ্ম লজ্জায় লাল
মধুময় এক্ষণ।
জানতাম না তার রূপখানি
কতই ছিল দামি,
রূপের নেশায় পিয়াসি ছিলাম
আশক্ত এই আমি।
চুক্ষজুড়ে বক্ষ মেলে
দেখেছি তার রূপ,
সে ছিল বাক্যহারা
ঠোঁটদ্বয় নিশ্চুপ।
চোখদুটি কাজলমাখা
হাতে দেবে রাঙ্গা মেহেদী,
তার রঙ্গে আমি বন্দী
প্রেমাগারের কয়েদি।