বুধবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৫

সত্য হলেও মিথ্যা

মিথ্যে হয়ে গেল আমার লেখা, প্রতিটি কবিতা
মিথ্যে প্রতিটি অক্ষর, বর্ণ, দাঁড়ি-কমা,
সেমিকোলন, চন্দ্রবিন্দু।
মাত্রা অতিরিক্ত বুকের শক্ত স্বাদ সব মিথ্যে, 
নিত্য ভাবনা, সুপ্ত সিক্ত স্বর,
মাদকে আশক্ত শিরা-উপশিরা সব মিথ্যে।

প্রেমের কথা, গপ্পো, রাত্রি জাগার পাপ
শত পুণ্যের মধ্যেখানে 
এক চিমটি ভালবাসার প্রাপ্তির অভিশাপ,
নারীর মিছিলে ঈগল চুক্ষু দিয়ে
স্বপ্ন খোঁজার অভিনয় সব মিথ্যে, সব মিথ্যা।


অনুভূতি-৮

বেঁচে থাকার অভিশাপ নিয়ে 
আমি বেঁচে থাকতে চাই না
বরং মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন করতে চাই।
দুই বাহু দিয়ে জড়িয়ে ধরতে চাই মৃত্যুকে
মৃত্যুর স্বাদ নিজের আর্তনাদ সব একাকার করে
নিরাকার হতে চাই মৃত্যুর বুকে মাথা রেখে।
মৃত্যুর কমল আঙ্গিস্পর্শ একবিন্দু পানির মতন
ঘড়িয়ে যাবে আমার সমস্ত অঙ্গে,
আমি নিজ অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করে
নিস্তেজ হবো ক্রমশ
দেহের বিকাশ স্থীর হয়ে 
নিশ্চুপ নীল আকাশের আবরণে 
প্রিয় ফুল গোলাপের শুকনো পাঁপড়ীর মতন
উড়ে যাবো মৃত্তিকার মাতৃগর্ভে।

ভিজা বিবেক

বৃষ্টিতে বিবেক ভিজে গেছে
রৌদ্দুরে মেলিয়ে দিলাম বিবেকের হাত-পা,
যা, একটু শুকিয়ে যা,
তোকে আবার ভিজতে হবে বৃষ্টিতে
একবারে ক্লান্ত হলে চলবে না।
বারবার, শতবার, হাজার-লক্ষবার
বৃষ্টিতে ভিজবি তুই।
আমি না, তোকে ভিজাবে নিঠুর প্রকৃতি,
মানুষ, সপ্ত দেয়াল।
আমি শুধু তোকে প্রতিবার রোদে শুকাবো।

অল্প প্রেমের গল্প

অল্প প্রেমের গল্প লিখেছি
অবেগভরা কথা বলেছি
দেখেছি যা দেখেনি কখনো,
এখন আছি কেমনে বাঁচি
হৃদয় মন্দির আস্ত শুন্য।

দেবি যাকে বানিয়ে ছিলাম
তাকে ছাড়া সবই পেলাম
পেলাম না শুধু চাওয়া,
হাত তুলে চোখের কূলে
জলের আসা যাওয়া।

প্রেমের সৌত অস্থির খুব
হার মেনেছে গ্রহপতির ধূপ,
তবুও শিশু মন
মুখ চেপে হয় না চুপ।

সময় চলে মুখের কথায়
চলে না প্রেম শুধু,
যে প্রেমে প্রেমিক আমি
প্রেমিক তুমি হয়েছি আজ ভীতু।

মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

উত্তর হতে প্রশ্ন

জীবন যোদ্ধে আমি এক পরাজিত যোদ্ধা,
নই জীবিত, নই তবু মুর্দা।
নই ভূমির আবরণে, নই ভূমির স্তরে,
নই প্রাণী প্রাণে, নই লাশ, যা হয়ে যায় মরে।
নেই আশা-ভালবাসা, নেই এক মুঠো আকাশ,
নেই কথা, নেই ব্যথা, শূন্যতায় বসবাস।
খালি লাগে শূন্যস্থানে, কোন বাক্যে বসবে সে,
তার প্রতিক্ষায় নিশি ফুরায়, জানি না তবু আসবে কে।
অচেনা শহরে আমার প্রহরে আমি মরি প্রতিদিন,
সহজ-সরল রূপ-রঙ্গে ব্যস্ত জীবন খুব কঠিন।
হেসেও হাসি না, কেঁদেও কাঁদি না, অশ্রু নিয়েছে ছুটি, 
মুখে নিয়ে নকল হাসি, মিটে গেছে সব খাঁটি।
বেঁচে আছি অভিনয়ে, মন তবু মৃত,
কথার ভীড়ে পা পৃষ্ট হয়েছি অজানিত হবে যত।
প্রশ্ন মনের দেয় না উত্তর, উত্তর দেয় প্রশ্ন,
দূঃখ নেই একবিন্দু, তবু দুঃখী কীসের জন্য ?

আমি তুমি ও প্রেম

চোখ বন্ধ করিলে দেখি তোমার চোখ,
ভালো লাগিল অন্তর-আত্মায় 
আসিল প্রেম অসুখ।
সে অসুখে ঘুম আসে না
সময় হয় না পাড়,
ভাবনার জানালা যায় খোলিয়া 
কল্পনায় দেখা পাই তোমার।
তুমি আসিয়া এক চিলতে হাসিয়া 
ভাসাইয়া দেও মোরে,
আমি উম্মাদ তোমার প্রেমে 
আসিতে চাই তোমার হৃদয় ঘরে,
ফুল হইয়া ফুটিতে চাই 
প্রভাতে তোমার দ্বারে,
বৃষ্টি আসিলে ভিজিবো আমি
লুকাবনা প্লাবনে ঝড়ে।
হাত বাড়াইয়া তুমি ধরিবে 
নিবে এক বুক শ্বাস,
সুগন্ধে মোরে না জড়িয়া ধরিলে 
হইবেনা প্রেম হ্রাস।
তোমারও বুকে প্রেম জাগিবে 
একদা আমার নামে,
সেইদিন তুমি আসিবে কাছে 
নীল রঙ্গের খামে।
আমি খোঁজিবোনা চিঠি, 
খোঁঁজিবোনা জোঁনাকি পরী
যাহা জ্বলে যায় মিটিমিটি।
আমি খোঁজিবো উষসীতে
প্রেমের দরিয়ায় খোঁজিবো 
আবারও এক চিলতে হাসি,
বলিবো শীগ্রি আমি 
আমি তোমাতে ভালবাসি।
করিবো না দেরি 
প্রেমের বিরহ লাগে না ভালো আর,
প্রেমের নিবেদন শুনিয়া তুমি
করিও না বন্ধ দ্বার,
ভালবাসিও মোরে
আমি বাসি তোমায়
না বাসিলেও অভিনয় প্রেমের 
করে যেও একবার।

শিশিরের শব্দ

একটি শিশিরের শব্দ ধ্বনিত হল কর্ণে,
কি যেন একটা বলে গেল সল্পভাষী বর্ণে।
আমি ব্যস্ত ছিলাম শীতের চাদরে,
শীতলায় উষ্ণ আদরে,
স্পষ্ট হয় নি শোনা শিশিরের শব্দ
বুঝেছি তবু, ধরা দিয়েছে
হৃদয়ে ফোটেছে পদ্ম।

ভালবাসার নূতন বীজ হতে 
প্রেমের শিকড় আখড়ে ধরেছে মন,
অনুভূতিতে শিশিরের ছন্দ 
ছুঁয়ে যায় সারাক্ষণ।
অবেগ জাগ্রত প্রণয় জ্বলে উঠে,
শিশির ভেজা প্রতিটি ঘাসে
শৈত্য মনের সবুজ মাঠে।

অসময়ে অবেলা আচকা
কুয়াশার চাদর গাঁয়ে মুড়িয়ে 
হেঁটে যায় প্রেম প্রিয়সী,
আমি দূর হতে তাকে দেখে 
নিজ নয়নে শিশির জলে যাই ভাসি।